গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের সব আন্তনগর ট্রেনের নিয়মিত যাত্রাবিরতির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচির এক পর্যায়ে লাল কাপড় দেখিয়ে ঢাকা অভিমুখী আন্তনগর ‘ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস’ ট্রেন থামানো হয়। স্টেশনমাস্টারের আশ্বাসে প্রায় আধা ঘণ্টা পর ট্রেনটি চলাচলের জন্য রেলপথ ছেড়ে দেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্টেশনটির প্ল্যাটফর্মে ‘সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শ্রীপুরের সর্বস্তরের জনগণ’–এর ব্যানারে মানববন্ধন হয়। একপর্যায়ে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস সেখানে পৌঁছালে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ট্রেনটি থামান আন্দোলনকারীরা। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ট্রেনটি কমলাপুর রেলস্টেশনের দিকে যাত্রা করে।

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, শিল্পোন্নত শ্রীপুর উপজেলাজুড়ে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন বসবাস করেন। তাঁরা সড়ক ও রেলপথে নিয়মিত যাতায়াত করেন। অথচ এ এলাকার রেলস্টেশনে কেবল একটি মাত্র আন্তনগর ট্রেন থামে। তাঁদের দাবি, শ্রীপুর তথা পুরো গাজীপুরের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে রেলযাত্রা অবারিত করতে হবে। এতে মানুষের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি সরকারি কোষাগারেও উল্লেখযোগ্য আয় জমা হবে।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী তপন বণিক বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করে শ্রীপুরে যমুনা ট্রেন থামিয়েছি। এখন এই স্টেশন হয়ে যাত্রীরা যাতে অন্য আন্তনগর ট্রেনের সেবা নিতে পারেন, সে ব্যবস্থার জন্যই আমরা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া আমানুল্লাহ জানান, ‘সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়ার ঘোষণা দিতে হবে। ঘোষণা না পেলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

বিষয়টি নিয়ে রেলের মহাপরিচালকের (ডিজি) সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে শ্রীপুর রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, ডিজি সাত দিনের সময় নিয়েছেন। এর মধ্যে এখন থেকে ব্রহ্মপুত্রসহ ওই রেলপথের সব আন্তনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায়, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র লপথ

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালী জেলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই স্কুলছাত্র শাহরিয়ার হাসান রিমনকে (১৬) এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে আহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাতে সুধারাম মডেল থানায় রিমনের মা বাদী হয়ে দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম ও ছবি প্রকাশ করেনি।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।

আহত শাহরিয়ার হাসান রিমন জেলা শহরের বসুন্ধরা কলোনি বাসিন্দা মো. জামাল উদ্দিন ও ফরিদা ইয়াছমিন দম্পত্তির ছেলে। সে স্থানীয় হরিনারায়ণপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু

ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনি, কারাগারে ইমামের মৃত্যু

বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে কিশোর গ্যাং সদস্যরা শাহরিয়ার হাসান রিমনকে ধারালো ছুরি এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় রাতে আহত রিমনের মা ফরিদা ইয়াছমিন ২১ জনকে এজহারভুক্ত ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই অভিযান পরিচালনা করে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।

রিমনের  মা ফরিদা ইয়াছমিন জানান, রিমনের পিঠে, মাথায়সহ মোট ছয়টি ছুরির আঘাত করা হয়। তার অপারেশন ঢাকা মেডিকেল কলেজে করানো হয়েছে। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা চলছে। তার পিঠের আঘাতগুলো ফুসফুস পর্যন্ত চলে গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, হামলাকারীরা ভেবেছিল রিমন মারা গেছে। যখন জানতে পারে সে বেঁচে আছে, তখন তারা ফের হামলা করতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল পর্যন্ত যায়। রিমনের অপরাধ দুই দল কিশোরের মাঝে চলমান দ্বন্দ্ব মিমাংসা করে দেওয়া। একপক্ষ মানলেও অপরপক্ষ মিমাংসার বিষয়টি মন থেকে মানতে পারেনি। তারাই আমার ছেলের উপর হামলা করেছে।

রিমনের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, রিমনকে ধারালো ছুরি দিয়ে মোট ছয়টি আঘাত করা হয়েছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি রিমনের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

ঢাকায় রিমনের সঙ্গে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদা সুলতানা ইতু জানান, রাতেই রিমনের সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। এরপর তার অপারেশন হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, রিমনের পিঠের আঘাতগুলো গুরুতর। ছুরির আঘাত প্রায় ফুসফুস পর্যন্ত চলে এসেছে। তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে জেলা শহরের বার্লিংটন মোড়ে একদল কিশোর রিমনকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বার্লিংটন এলাকাটি কিশোর গ্যাংয়ের আখড়া। এই এলাকা দিয়ে প্রতিদিন সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, হরিনারায়ণপুর স্কুল, সরকারি মহিলা কলেজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীরা যাতায়াত করে। প্রতিদিন তাদের উত্ত্যক্ত করা হয়। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করে না। প্রশাসনেরও নজরদারি নেই।

এদিকে, রিমনকে ছুরিকাঘাত করে আহত করার প্রতিবাদে তার স্কুলের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্কুলের সামনে প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে রিমনের স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, স্কুলের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে রিমনের উপর যারা হামলা করেছেন, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এজহারভুক্ত একজনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় আমাদের আরো অনুসন্ধান চলছে। সিসি ক্যামেরা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অপরাধীদের খুব দ্রুতই আইনের আওতায় আনতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি। 
 

ঢাকা/সুজন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রমিকদের আবাসনসহ ৯ দফা দাবিতে মানববন্ধন
  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • তারেক রহমানের ৩১ দফার মধ্যেই সংস্কার রয়েছে, অচিরেই নির্বাচন দিন : সোহাগ
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে তিতুমীরে মানববন্ধন
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
  • আন্তনগর ট্রেন বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ চলছে
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩