বিএনপির ২৮ জনের বিরুদ্ধে যুবদল নেতার মামলা
Published: 26th, February 2025 GMT
কুমিল্লার তিতাসে দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুবদল নেতা। মঙ্গলবার রাতে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন জগতপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক তফাজ্জল হোসেন তবিল। একই দিন দুপুরে উজিরাকান্দি বাজারে বিএনপির আঞ্চলিক অফিসটি ভাঙচুর করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, জগতপুর ইউনিয়নের উজিরাকান্দি বাজারে ১৫-১৬ দিন আগে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করা হয়। যা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার মারুফ হোসেনের উদ্বোধন করার কথা ছিল। প্রধান আসামি উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মনিরুল হক তপন ভূঁইয়া জায়গাটি দখলে নিতে ঘর নির্মাণের সময় বাধা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় তপন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে মামলার অন্য আসামিরা অফিসটি ভেঙে ফেলেন এবং আসবাবপত্র নিয়ে যান। এতে প্রায় ৩ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মনিরুল হক তপন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার জায়গা দখল করে আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইয়াছিন ভূঁইয়া এখানে অফিস করেছিল। গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনের সময় সেটি ভেঙে ফেলা হয়। এর পর ইয়াছিন ভূঁইয়ার নির্দেশে এখানে তবিল ঘর তুলেছেন, যার অডিও আমার কাছে আছে। আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে বিএনপির নেতা ঘর তুলবে সেটা তো বিএনপির অফিস হতে পারে না। আমি ১৬ বছর বিএনপির রাজনীতি করেছি। অফিস করলে আমরা করব।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইয়াছিন ভূঁইয়ার ভাষ্য, জায়গাটি তাঁর ক্রয় করা সম্পত্তি। কিছুদিন আগে তবিলের কাছে তা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তবিল সেখানে দলীয় অফিস করেছেন।
আরেকটি পক্ষ ভাড়া নিতে চেয়েছিল, তাদের বলা হয়েছে- তবিলকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে, তবিল সেখানে অফিস করবেন। অফিস ভাঙচুরের বিষয়টি বিএনপির দলীয় বিষয়, এ ব্যাপারে তাঁর কোনো মন্তব্য নেই।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ বলেন, অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত
ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।