পাকিস্তানের প্রেসবক্সের একটা সুন্দর সংস্কৃতি—সিরিজ বা টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার দিন প্রেসবক্সে থাকা সাংবাদিকদের গ্রুপ ছবি তোলা হয়। সেই ছবি তোলা আবার বিরাট হুলুস্থুল এক ব্যাপার। কে কোথায় আছে, সবাইকে ডেকে এনে এক জায়গায় জড়ো করো। তারপর শুরু হয় ছবি তোলা। প্রফেশনাল ক্যামেরা থাকে, সঙ্গে যার যার ইচ্ছা অনুযায়ী সেলফি–ভিডিও, এখন আবার রিল বানানোও যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে আনন্দঘন এক পরিবেশ।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এখনো শেষ হয়নি, তবে আজ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত বাংলাদেশ–পাকিস্তান ‘ম্যাচ’ দিয়ে শেষ হয়ে গেছে রাওয়ালপিন্ডি পর্ব। যথারীতি ছবি তোলার ধুম পড়ল। টুর্নামেন্টে তিনটি ম্যাচ ছিল এখানে, যার দুটিই ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বাংলাদেশ–পাকিস্তান ম্যাচের আগে বৃষ্টির কারণে হতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া–দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচও। পিন্ডি স্টেডিয়ামে হয়েছে কেবল বাংলাদেশ–নিউজিল্যান্ড ম্যাচটাই।

দুবাইয়ে ভারত ও রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে শূন্য হাতে দেশে ফিরছে। শূন্য হাতে ফিরছে না বলে কেউ অবশ্য বলতে পারেন, কেন, ১ পয়েন্ট তো আছে! ওটাকে প্রাপ্তি বলাটা রসিকতা। তবে পেসারদের ভালো বোলিং আর ভারতের বিপক্ষে তাওহিদ হৃদয়ের সেঞ্চুরিটাকে টুর্নামেন্টের প্রাপ্তি হিসেবে দেখতে পারেন।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ কবে ‘আফগানিস্তান’ হতে পারবে ২ ঘণ্টা আগে

কিন্তু যে টুর্নামেন্টে দল এসেছিল ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়ার আশাবাদ জানিয়ে, তা থেকে শুধু ভালো বোলিং আর একটা সেঞ্চুরিতে তৃপ্ত হয়ে ফেরাটা কি নিজেদেরই অপমান করা নয়! আপনি এসেছিলেন সেরা হতে, ফিরছেন একটি ম্যাচও না জিতে; এমন টুর্নামেন্টে বোলিং–ব্যাটিং করে উল্টে ফেললেই–বা কী আসে যায়! ফলাফল তো শূন্য।

আরও পড়ুননাজমুল বললেন, চ্যাম্পিয়ন হতেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যাচ্ছেন১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে ভালো খেলেনি বলে যাঁরা হতাশ হচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যাশার সীমা অবাক করার মতো। নাজমুল হোসেনের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘোষণায় যাঁদের মনের কোণে আশা বাসা বেঁধেছিল, চ্যাম্পিয়ন না হোক; বাংলাদেশ সেমিফাইনালে তো যাবে; তাঁদেরও অতি আশাবাদী কোটাতেই ফেলতে হবে।

পাকিস্তানে সিরিজ বা টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার দিন প্রেসবক্সে থাকা সাংবাদিকদের গ্রুপ ছবি তোলা হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ