আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আহ্বান
Published: 28th, February 2025 GMT
শরণার্থীবিষয়ক আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে সফলভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, যাতে বহু দশক ধরে চলতে থাকা মানবিক ট্র্যাজেডিকে আবারও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে এবং দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়িত মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য আরও সমর্থন সংগ্রহ করা যায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন, এই সম্মেলনকে একটি বড় সফলতা হিসেবে বাস্তবায়ন করি এবং সমস্যার সমাধান করি। আশা করি, এর মাধ্যমে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসবে।’
‘ভবিষ্যতের একটি পথ থাকা উচিত। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হয়’, যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি জাতিসংঘের উদ্যোগে চলতি বছর অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রতি তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেন।
গ্র্যান্ডি রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘আসুন, এ বিষয়টিকে পুনরায় বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরি। জাতিসংঘের এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার একটি দুর্দান্ত উপায়।’ তিনি বলেন, এটি রাখাইন অঞ্চলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে আস্থা তৈরি করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
‘আমরা আপনার সঙ্গে কাজ করতে পেরে আনন্দিত’ উল্লেখ করে গ্র্যান্ডি আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আগামী মার্চের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সফর এই ইস্যুতে নতুন গতি সঞ্চার করবে।
সাক্ষাৎকালে অধ্যাপক ইউনূস ও গ্র্যান্ডি বাংলাদেশে আশ্রয়শিবিরে বসবাসরত ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য আরও আর্থিক সহায়তা সংগ্রহের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন, বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির নতুন দিকনির্দেশনা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। তাঁরা রাখাইন রাজ্যের মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন, যেখানে একটি প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিয়ানমার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
পশ্চিম মিয়ানমার রাজ্যের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের স্বার্থে শত্রুতা কমানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে আলোচনায় উঠে আসে।
এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে তাঁরা অভিমত ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারসংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।