বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত, সেমিতে অস্ট্রেলিয়া
Published: 1st, March 2025 GMT
শীতের শেষ ভাগে পাকিস্তানে ভালোই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বৃষ্টি। গতকালও বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলো অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান ম্যাচ। এ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ৩টি ম্যাচ বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত হলো। গতকাল পরিত্যক্ত হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আফগানিস্তানের। তাদের সেমির স্বপ্ন প্রায় শেষ হয়ে গেছে। আর শেষ চার নিশ্চিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। আর সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকাও। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে (ন্যূনতম ২০৭ রানে) না হারলেই প্রোটিয়াদের শেষ চার নিশ্চিত।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যে আফগানিস্তানকে দেখা গিয়েছিল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে তেজ দেখা যায়নি। তবে সেদিন ইব্রাহিম জাদরানের মতো স্মরণীয় ইনিংস খেলতে না পারলেও গতকাল সেদিকুল্লাহ অটল ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই দুটি কার্যকর হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। দু’জনের নৈপুণ্যে লাহোরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৭৩ রান সংগ্রহ করে আফগানরা। এ লক্ষ্যের জবাব দিতে বিস্ফোরক সূচনা করে অস্ট্রেলিয়া। তবে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলা ট্রাভিস হেডের অগ্রযাত্রা থামায় বৃষ্টি। হেড ঝড়ে ১২.
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তেমন একটা ভালো নয়। হালকা বৃষ্টি হলেও মাঠ খেলার উপযোগী করতে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় লেগে যায়। তাই ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছে। ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় আফগানিস্তানের পয়েন্ট এখন ৩, অস্ট্রেলিয়া ৪ পয়েন্ট নিয়ে সেমিতে। এই গ্রুপের অপর দল দক্ষিণ আফ্রিকার ঝুলিতে এরই মধ্যে ৩ পয়েন্ট রয়েছে। আফগানদের (-০.৯৯০) নেট রান রেটের তুলনায় প্রোটিয়াদের (২.১৪০) নেট রান রেট বেশ ভালো। তাই আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলে কিংবা পরিত্যক্ত হলে তো বটেই, ন্যূনতম ২০৭ রানের ব্যবধানে পরাজিত না হলেই সেমিতে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সেমিতে যাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় ছাড়া পথ ছিল না আফগানদের সামনে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে আফগানদের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ওভারেই জনসনের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান রহমানুল্লাহ গুরবাজ। অপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ইংল্যান্ড ম্যাচের মতো খেলতে পারেননি; ২৮ বলে ২২ রান করে লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পার বলে ক্যাচ দেন। চার নম্বরে নেমে ভরসা দিতে পারেননি অভিজ্ঞ রহমত শাহও। তবে এক প্রান্তে রুখে দাঁড়ান সেদিকুল্লাহ অটল। তরুণ এ ব্যাটার চমৎকার ব্যাটিং করেন। কিন্তু আফগান ইনিংস প্রয়োজনীয় গতি পেল না অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদির মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য। গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ নম্বর পজিশনে নেমে তিনি ৪৯ বলে ২০ রান করেন, যেখানে ডট বল ছিল ৩৩টি। তাই সেদিকুল্লাহ ৯৫ বলে ৮৫ রানের ইনিংসটি খেলার পরও বড় রানের জুটি তৈরি হয়নি। সেদিকুল্লাহর বিদায়ের পর হাল ধরেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ১টি চার ও ৫ ছক্কায় তাঁর ৬৩ বলে ৬৭ রানের ইনিংসে আফগানরা ভদ্রস্থ স্কোর দাঁড় করায়। তাদের রান এই জায়গায় পৌঁছে দিতে অসি বোলাররাও অবদান রাখেন। অতিরিক্ত খাতে ৩৬ রান দেন তারা। যেখানে তারা ওয়াইড বল করেন ১৭টি। তবে এই এলোমেলো বোলিংয়ের ফায়দা তুলতে পারেনি আফগানরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?