রমজানকে সামনে রেখে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ভারত থেকে বেড়েছে ছোলা আমদানি। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। হিলির বাজারে গত এক মাসের ব্যবধানে ছোলার দাম কমেছে কেজিতে ২৫ টাকা। বর্তমানে ইফতারের অন্যতম এই উপকরণটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে।  

শনিবার (১ মার্চ) সকালে হিলি বন্দর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানে বাজারে ছোলার দাম কম বা স্বাভাবিক রাখতে ভারত থেকে পর্যাপ্ত ছোলা আমদানি করছেন ব্যবসায়ীরা। কয়েক মাস আগেও এই বন্দরে দিনে এক থেকে দুই ট্রাক ছোলা আমদানি হত। রমজানকে ঘিরে শুল্কমুক্ত প্রতিদিন ১০ থেকে ২০ ট্রাক ছোলা আমদানি হচ্ছে। যে কারণে কমে গেছে ছোলার দাম। এক মাস আগে বাজারে ছোলার কেজি ছিল ১২৫ টাকা। বর্তমান দাম কমে ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। 

তারা আরো জানান, বাজারে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে মোটাটা ১০০ টাকা ও দেশিটা ১৩০ টাকা কেজি দরে। বুটের ডাল ১২০, খেসারির ডাল ১০৫, মাসকলাই ১৮০ ও মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে।   

আরো পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ায় রোজা শুরু শনিবার

দেশের সব মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতমে তারাবিহ পড়ার আহ্বান

হিলি বাজারে ছোলা কিনতে আসা আব্দুল খালেক বলেন, “ইনশাআল্লাহ আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে রমজান মাস। ইফতারের জন্য ছোলার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আজ বাজারে ছোলা কিনতে আসলাম। দাম আগের চেয়ে অনেক কম। এর আগে ১২৫ টাকা কেজি দরে ছোলা কিনেছিলাম, আজ মাত্র ১০০ টাকা কেজি।”

মফিদুল ইসলাম নামে অপর ক্রেতা বলেন, “প্রতিবছর রমজানে নিত্যপণ্যের দাম থাকে বাড়তির দিকে। এবার চিত্র আলাদা। প্রায় পণ্যের দাম কম। এবার ছোলা ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০, আদা ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা ও রসুন ১০০ টাকা কেজি দরে কিনতে পেরেছি। পাশাপাশি অন্যান্য সবজির দামও অনেক কম। আশা করছি, এবার রমজানে তেমন সমস্যা হবে না।”  

হিলি বাজারে ছোলার ব্যবসায়ী জামান বলেন, “বর্তমান ভারত থেকে এই বন্দরে পর্যাপ্ত ছোলা আমদানি হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য দেশ থেকেও ছোলা আমদানি করছে সরকার বলে শুনেছি। মূলত রমজান মাসে এসব পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার জন্যই আমদানি করা হচ্ছে। আমরা ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি হিসেবে ছোলা খুচরা বিক্রি করছি।” 

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, “কিছুদিন ধরে এই বন্দরে ছোলা আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুল্কমুক্তভাবে পণ্যটি আমদানি হচ্ছে। যেহেতু রমজান মাস চলে এসেছে, সেহেতু আমরা কাস্টমসের সব কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করে পণ্যটির ছাড়করণ করছি।” 

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন আমদ ন র দ ম কম ১০০ ট ক আমদ ন রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ