মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার পর ভারতের তিনটি শহরে ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রথম মেডিকেল ক্লিনিকের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ট্রান্সজেন্ডার মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় মিত্র (বন্ধু) নামের ক্লিনিকটি ২০২১ সালে ভারতের দক্ষিণের শহর হায়দরাবাদে যাত্রা শুরু করে। হাজার হাজার ট্রান্সজেন্ডারকে এইচআইভি চিকিৎসা, সহায়তা ও পরামর্শসেবা দিয়ে আসছিল এই ক্লিনিক।

একই বছর পশ্চিম ভারতের থান ও পুনে শহরে মিত্র ক্লিনিকের দুটি শাখা যাত্রা শুরু করে। মার্কিন সহায়তা সংকটের কারণে এ দুটির কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য সব বিদেশি সহায়তা বন্ধ করে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চান, তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে বিদেশি ব্যয় ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করা হোক।

১৯৬০-এর দশক থেকে বিদেশে মানবিক সহায়তার তদারকি করছে মার্কিন সংস্থা ইউএসএআইডি। ট্রাম্প সংস্থাটির বিরুদ্ধে কঠোর দমন নীতি গ্রহণ করেছেন।

ইউএসএআইডির বিভিন্ন তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বব্যাপী কয়েক ডজন উন্নয়ন কর্মসূচিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, বিশেষ করে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।

ভারতে মিত্র ক্লিনিকগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসাসেবার ওপর প্রভাব পড়েছে।

ক্লিনিকের ইনচার্জ ট্রান্সজেন্ডার রাছানা মুদ্রাবয়িনা বিবিসি হিন্দিকে বলেছেন, ‘আমরা সেবা দেওয়ার জন্য প্রতি মাসে আড়াই লাখ রুপি টাকা পেতাম।’

ক্লিনিক বন্ধের খবরে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে। ভারতের প্রায় ২০ লাখ ট্রান্সজেন্ডার মানুষ রয়েছেন বলে অনুমান করা হয়। যদিও এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে দাবি করছেন সমাজকর্মীরা।

ক্লিনিকের কর্মীরা বলছেন, তাঁরা বিকল্প উৎস থেকে তহবিল পাওয়ার চেষ্টা করছেন। সরকার তাঁদের সহায়তায় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহ য ত

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা

আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।

শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’

স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’

আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ