রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের সম্মানে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের ইফতারে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতারা যাননি। তবে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাসহ কূটনীতিকদের অনেকে অংশ নেন।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে ইফতার-পূর্ব বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ আমলের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদের বলেন, ‘এমন বিভাজন দেখছি, যা সমাজকে ক্ষতবিক্ষত করছে। আমরা যে বাংলাদেশকে চিনি ও ভালোবাসি, সেখানে এমন ঘটনা অনভিপ্রেত। অবশ্যই ঐক্যের পথ নতুন করে আবিষ্কার করতে হবে।’

২০২৩ সালের রমজানে ১০ বছর পর জাপার ইফতারে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। এবারের ইফতারে শেখ হাসিনার পতন ঘটানো অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ কোনো দলের নেতা যাননি।
তবে অংশ নিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.

) আব্দুল মান্নান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, জাসদ (ইনু) যুগ্ম সম্পাদক মো. মহসিন, ইসলামী ঐক্যজোটের যুগ্ম মহাসচিব মাহমুদুল হক হাফেজ্জী প্রমুখ।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক, চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনসহ নরওয়ে, রাশিয়া, নেপাল, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইরান, কসোভো, ইতালি, আর্জেন্টিনা, ভ্যাটিকান সিটির কূটনীতিকরা ইফতারে অংশ নেন।

জাপা নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এটিইউ তাজ রহমান, আব্দুর রশিদ সরকার, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র র ইফত র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ