হামাসের সঙ্গে গোপন বৈঠক ট্রাম্প প্রশাসনের
Published: 6th, March 2025 GMT
গাজা উপত্যকায় আটক মার্কিন জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি বৃহত্তর চুক্তির লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জিম্মি বিষয়ক দূত অ্যাডাম বোহেলার সাম্প্রতিক সময়ে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বুধবার (৫ মার্চ) দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ আলোচনা ‘অভূতপূর্ব’ ঘটনা। কারণ দেশটি এর আগে কখনো সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেনি। ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দলটিকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায়’ রেখেছে মার্কিন সরকার।
আরো পড়ুন:
ভারতীয় পণ্যেও শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো উপায়ে গ্রিনল্যান্ড ‘দখল’ করবে: ট্রাম্প
প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রশাসন যে হামাসের সঙ্গে আলোচনার পথে হাঁটতে পারে এমনটা ইসরায়েলকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দুপক্ষে আলোচনা হয়ে গেছে, সেটি অন্য একটি চ্যানেলের মাধ্যমে ইসরায়েল জেনেছে।
এই আলোচনার লক্ষ্য হলো হামাসের কাছে বন্দি থাকা মার্কিন জিম্মিকে মুক্ত করা। এছাড়া সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। যেটির লক্ষ্য হলো সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র এক্সিউসকে জানিয়েছে, আলোচনা চললেও হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো ধরনের চুক্তি এখনো হয়নি।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকোফের মঙ্গলবার কাতারে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হতো। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি তার সফরটি বাতিল করেছেন।
এক্সিওস জানিয়েছে, গাজা ইস্যুতে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ ট্রাম্প বারবার হুমকি দিয়ে আসছেন যে, হামাসের জন্য ‘নরকের দরজা খুলে’ দেবেন এবং গাজা দখল করবেন। এছাড়া ইসরায়েলকে না জানিয়ে হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি ভিন্ন পদক্ষেপ, যা পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসনগুলোতে কখনো ঘটেনি।
হামাসের কাছে এখনো ৫৯ জিম্মি রয়েছে। যার মধ্যে ৩৫ জনই মারা গেছে বলে ধারণা দখলদার ইসরাইলের। এই ৫৯ জিম্মির মধ্যে একমাত্র মার্কিন জীবিত জিম্মি হলেন ২১ বছর বয়সী ইডান-আলেক্সান্ডার। তাকে মুক্ত করতেই মূলত আলোচনা চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করারও চেষ্টা চলছে।
এদিকে গত শনিবার হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ৪২ দিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। যদিও দখলদার ইসরাইল গাজায় এখনো হামলা চালানো শুরু করেনি। তবে ওইদিন থেকেই উপত্যকাটিতে সব ধরনের খাদ্য পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে তারা।
হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বুধবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে। তিনি আরো বলেছেন, বিষয়টি ইসরায়েলকে আগেই জানানো হয়েছিল।
হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্প বিশ্বাস করেন এটি মার্কিন জনগণের জন্য সঠিক পদক্ষেপ। কারণ আমেরিকানদের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।
শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।
আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেনরাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।
দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।
২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।
আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫