এ বছরের জানুয়ারিতে পাওলো ফনসেকাকে প্রধান কোচ করে এনেছে অলিম্পিক লিওঁ। ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর।

কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই লিওঁকে নতুন কোচের সন্ধানে নামতে হচ্ছে। রেফারির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে যে নভেম্বর পর্যন্ত নিষিদ্ধ হয়েছেন ফনসেকা! প্রায় ৯ মাস প্রধান কোচ ছাড়া লিওঁ চলবে কী করে?

নিজেদের মাঠ গ্রুপামা স্টেডিয়ামে গত রোববার ফরাসি লিগ আঁর ম্যাচে ব্রেস্তকে ২-১ গোলে হারিয়েছে লিওঁ। সে দিন ম্যাচের যোগ করা সময়ে ব্রেস্তের পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি বেনোয়া মিয়ে।

এ নিয়ে রেফারির ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ফনসেকা। তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তাঁকে ঢুস মেরে বসেন ৫২ বছর বয়সী পর্তুগিজ কোচ। ফলে লাল কার্ড দেখে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়। ভিএআর অবশ্য লিওঁর পক্ষেই রায় দেয়। রেফারি মিয়ের সিদ্ধান্ত ভিএআরে বাতিল করা হলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ফ্রান্সের অন্যতম সফল ক্লাবটি।

তবে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বদলে গেলেও ফনসেকার অপরাধ তো অপরাধই রয়ে গেছে। তাই তখনই ধারণা করা গিয়েছিল, কোচ ফনসেকার ওপর আরও বড় শাস্তির খড়্‌গ নেমে আসতে পারে। যদিও রেফারির সঙ্গে এমন আচরণের পর দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শাস্তি থেকে বাঁচতে পারলেন না।

লিগ আঁর শৃঙ্খলা কমিশন জানিয়েছে, ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দলের ডাগআউটে দাঁড়াতে পারবেন না ফনসেকা। এ সময় পর্যন্ত রেফারিদের ড্রেসিংরুমেও ঢুকতে পারবে না। এমনকি সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত নিজ দলের ড্রেসিংরুমেও তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ফনসেকাকে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিতে গিয়ে লিগ আঁর শৃঙ্খলা কমিশনের সভাপতি সেবাস্তিয়েন দুনেই বলেছেন, ‘তিনি (ফনসেকা) রেফারির দিকে তেড়ে গিয়ে চিৎকার করে ভীতি প্রদর্শন করেছেন এবং হুমকিমূলক মনোভাব প্রদর্শন করেছেন।’

সম্প্রতি অসেরের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের পর রেফারিকে ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে ১৫ ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন অলিম্পিক মার্শেইয়ের সভাপতি পাবলো লোঙ্গোরিয়া। সেই প্রসঙ্গ টেনে দুনেই আরও বলেছেন, ‘কমিশন দুঃখ প্রকাশ করছে যে আবারও লিগ আঁর একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব এমন আচরণ প্রদর্শন করেছেন। জনাব ফনসেকা লিগ আঁর একটি দলের কোচ। সর্বোপরি তিনি একজন শিক্ষক এবং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে এ ধরনের মনোভাব তাঁর সঙ্গে একেবারেই বেমানান।’

ফনসেকার কোচিংয়ে এখন পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচ খেলেছে অলিম্পিক লিওঁ। জিতেছে তিনটিতে, হেরেছে দুটিতে। ২৪ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে এ মুহূর্তে লিগ আঁর ৬ নম্বরে আছে লিওঁ। আজ রাতে ইউরোপা লিগের ম্যাচে দলটি রোমানিয়ার ক্লাব স্টুয়া বুখারেস্টের বিপক্ষে খেলবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের