ক্লাব বিশ্বকাপের প্রাইজমানি ১০০ কোটি ডলার, আসল বিশ্বকাপের দ্বিগুণের বেশি
Published: 6th, March 2025 GMT
২০২৫ সালের ক্লাব বিশ্বকাপের প্রাইজমানি ঘোষণা করেছে ফিফা। ৩২ দলের এই টুর্নামেন্টের জন্য যে পরিমাণ প্রাইজমানি ঘোষণা করা হয়েছে, সেটা শুনে অনেকেই অবাক হতে পারেন। পরিমাণটা যে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের প্রাইজমানির দ্বিগুণের বেশি!
যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ জুন থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত হতে যাওয়া ক্লাব বিশ্বকাপের প্রাইজমানি ১০০ কোটি ডলার। জাতীয় ফুটবল দলগুলোকে নিয়ে আয়োজিত ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের প্রাইজমানি ছিল ৪৪ কোটি ডলার আর ২০২৩ নারী বিশ্বকাপের প্রাইজমানি ছিল ১১ কোটি ডলার।
ফিফা এক বিবৃতিতে বলেছে, ৩২ দল নিয়ে আয়োজন করতে যাওয়া ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে ২০০ কোটি ডলার আয় হতে পারে। একই সঙ্গে মেয়েদের ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৮ সাল থেকে হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনক্লাব বিশ্বকাপ থেকে কত টাকা পাবে রিয়াল–সিটি–মায়ামি ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪ফিফা বিবৃতিতে এ–ও জানিয়েছে যে এই টুর্নামেন্ট থেকে যে পরিমাণ অর্থ আয় হবে, তার সবটাই ভাগ করে দেওয়া হবে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর মধ্যে। ফিফা একটি ডলারও নিজেদের জন্য রাখবে না। টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া সব ক্লাবের জন্যই প্রাইজমানি থাকবে।এ ছাড়া ফলের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হবে পারফরম্যান্স ফি।
আরও পড়ুন২০২৫ ক্লাব বিশ্বকাপ ‘চাপিয়ে’ দেওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ফিফার১০ মে ২০২৪২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিটি মহাদেশের চ্যাম্পিয়ন ও আয়োজক দেশের একটি দল নিয়ে। এবারই প্রথম ছয় মহাদেশ থেকে খেলবে ৩২ দল। ১৪ জুন উদ্বোধনী ম্যাচে মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ইন্টার মায়ামি মুখোমুখি হবে মিসরের আল আহলির।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভিটামিনসমৃদ্ধ ভোজ্যতেল পাওয়ায় বাধা খোলা ড্রাম
আগামী প্রজন্ম রোগমুক্ত রাখতে ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেলপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে ড্রামে খোলা তেল বাজারজাত করা একটি বড় বাধা। একই সঙ্গে তেলে ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধকরণ ও গুণগত প্যাকেজিং অত্যন্ত জরুরি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর বাংলামটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত ‘সবার জন্য ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব বিষয় তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এই কর্মশালা আয়োজন করে। কর্মশালায় জানানো হয়, জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ অনুযায়ী, প্রাক-বিদ্যালয়গামী প্রতি পাঁচ শিশুর মধ্যে একজন ভিটামিন-এ এবং দু’জন শিশু ভিটামিন-ডির ঘাটতিতে ভুগছে। যদিও ভোজ্যতেলে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ করতে ২০১৩ সালে আইন করেছে সরকার। আইন অনুযায়ী, ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজারজাত করা নিষিদ্ধ।
কর্মশালায় বলা হয়, আইসিডিডিআরবি,র এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশ ড্রামে বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ তেলে ভিটামিন-এ নেই, আর ৩৪ শতাংশে প্রয়োজনের চেয়ে কম মাত্রা। ৭ শতাংশ ড্রামের খোলা তেলে আইন অনুসারে ভিটামিন-এর নির্ধারিত পরিমাণ পাওয়া গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ আইনটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম ও গবেষণাগার বিভাগের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের কনসালট্যান্ট সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথের অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ প্রমুখ।
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, নন-ফুড গ্রেড উপকরণে তৈরি ড্রাম দিয়ে ভোজ্যতেল পরিবহন করা হয়, যেগুলো আগে কেমিক্যাল, লুব্রিকেন্ট/মবিল বা অন্যান্য শিল্পপণ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ড্রামে রাখা ভোজ্যতেল জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি এতে ভেজাল মেশানোর আশঙ্কা থাকে। পুরোনো ড্রামগুলোতে লেবেল না থাকায় তেলের উৎপত্তিস্থল বা সরবরাহকারীকে শনাক্ত করা যায় না। তাই খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ আইন বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জুলাই ২০২২-এর পর থেকে ড্রামে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বর ২০২২-এর পর থেকে খোলা পাম অয়েল বাজারজাত বন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। তাই নিরাপদ ভোজ্যতেল ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
বক্তারা জানান, ভিটামিন-এর ঘাটতি অন্ধত্ব, গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুর কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন-ডি-এর অভাব রিকেটস ও হাড় ক্ষয়ের পাশাপাশি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এ প্রেক্ষাপটে ভোজ্যতেলে ভিটামিন-এ ও ডি সমৃদ্ধকরণ একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে সহজে এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন পেতে পারে।