ইউপিডিএফ’র গোপন আস্তানায় মিলল গোলাবারুদ
Published: 8th, March 2025 GMT
রাঙামাটির কাউখালি উপজেলায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের-ইউপিডিএফ (মূল) গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। এসময় তারা সেখান থেকে গোলাবারুদসহ বিভিন্ন ধরনের সমঞ্জাম জব্দ করেছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) ভোরে অভিযান চালানো হয়। একই দিন বিকেলে রাঙামাটি সেনা জোনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান রাঙামাটি সদর সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ জুনাঈদ উদ্দীন শাহ চৌধুরী।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ জুনাঈদ উদ্দীন শাহ চৌধুরী জানান, শুক্রবার ভোরে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাঙামাটি জেলার কাউখালি এলাকায় ইউপিডিএফ (মূল) এর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাঙামাটি সদর সেনা জোন। এসময় সেনাবাহিনী ইউপিডিএফ (মূল) সদস্যদের একটি গোপন আস্তানার সন্ধান পায়। সেনা সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে তল্লাশি চালিয়ে আস্তানা থেকে তাদের ব্যবহৃত একটি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি বাইনোকুলার, একটি ওয়াকি-টকি সেট, একটি হার্ডডিস্ক, ইউনিফর্ম ও চাঁদা আদায়ের রশিদসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
আরো পড়ুন:
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ
নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে: সেনাপ্রধান
তিনি আরো জানান, সেনাবাহিনী অভিযান শেষ করে ফেরার পথে ইউপিডিএফ একদল নারী ও শিশু দিয়ে পথরোধ করার চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করলে তারা পথ ছেড়ে চলে যায়। ওই এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সন্দেহজনক কোনো তথ্য বা গতিবিধি নজরে এলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো.
ঢাকা/শংকর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস