ঝালকাঠিতে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যের গলাকাটা লাশ উদ্ধার, আটক ১
Published: 8th, March 2025 GMT
ঝালকাঠি সদর উপজেলায় অবসরপ্রাপ্ত এক সেনাসদস্যের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের স্বল্পসেনা গ্রামের ঘর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
লাশ উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম দেলোয়ার হোসেন মৃধা (৬৫)। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তাঁর বাড়ির কাজের লোক সোহরাব হোসেনকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ, স্বজন ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, দেলোয়ার হোসেন সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের নির্জন বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। তাঁর স্ত্রী দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঝালকাঠি পৌর শহরে বসবাস করেন। দেলোয়ার বাড়িতে শাকসবজির চাষ ও গরু-ছাগল লালন–পালন করতেন। এ কাজে সোহরাব হোসেন সহায়তা করতে। বাড়ির কাজের লোক হিসেবে থাকা সোহরাব নেশা করতেন। সোহরাবের সঙ্গে দেলোয়ারের কোনো বিষয় নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
নিহত দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে ঝালকাঠি শহর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহামুদুল হাসান (বাবু) বলেন, ‘আমার বাবা গ্রামে থাকতে পছন্দ করতেন। তাঁকে আমরা শহরে নেওয়ার জন্য বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। গতকাল তিনি পেনশনের টাকা উত্তোলন করে বাড়িতে রাখেন। আজ দুপুরের দিকে বাবার খোঁজ নিতে বাড়িতে এসে তাঁর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরে প্রবেশ করে দেখি, তাঁর গলাকাটা রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে। পরে ঘরের বাহির থেকে সোহরাব হোসেনকে আটক করি। তার পকেট থেকে আমার বাবার পেনশনের ৫ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। আমার বাবা আজ সকালেও লাউয়ের মাচা থেকে লাউ কেটে প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে সোহরাব এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আমরা ধরণা করছি।’
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক