নাজমুল হোসেন শান্ত টি২০ দলের অধিনায়ক থাকবেন না, তা আগেই জানা গেছে। টেস্ট ও ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে থাকছেন তিনি। শান্তর পারফরম্যান্স এ দুই সংস্করণে যথেষ্ট ভালো। তাঁর ব্যক্তিত্ব, একাগ্রতা, জাতীয় দল সতীর্থদের সঙ্গে সম্পর্কের জায়গাটিও মজবুত হওয়ায় কোচিং স্টাফের পছন্দের অধিনায়ক তিনি। বিসিবি কর্মকর্তারাও শান্তর পক্ষে। স্বাভাবিকভাবেই ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত নেতৃত্বে রাখা হতে পারে তাঁকে। বিসিবি পরিচালকরাও সে রকম সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। তবে টি২০ দলের নেতৃত্বের জন্য একজন পারফরমার ও দায়িত্বশীল অধিনায়ক খোঁজা হচ্ছে।
লিটন কুমার দাস সে ক্ষেত্রে সেরা পছন্দ। তাঁর নেতৃত্বে এরই মধ্যে ভালোও করেছে দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছে তাদের মাটিতে। বিপিএলে ভালো খেলে টি২০ দলে থাকা এবং নেত্বত্ব ধরে রাখার বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত করেছেন উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কথাতেও সে রকম ইঙ্গিত আছে।
টেস্টে লিটনের পারফরম্যান্স ধারাবাহিক। টি২০তেও মোটামুটি ভালো। সে তুলনায় ওয়ানডেতে ধারাবাহিক হতে পারছেন না তিনি। ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে শেষ ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর। স্কোয়াড থেকে বাদ পড়ে সস্ত্রীক হোটেল ছেড়েছিলেন। ঢাকা লিগে ম্যাচ খেলতে নেমেও রান করতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ওয়ানডে সিরিজে রান না পাওয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নেওয়া হয়নি। উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারকে ছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং টানা দুই ম্যাচের ব্যাটিং ব্যর্থতা লিটনের অনুপস্থিতি জানান দিয়েছে।
টপঅর্ডারে বাঁহাতি ব্যাটার কমাতে গিয়ে ব্যাটিং অর্ডারে হাত দিতে হয়েছে। এই পরিবর্তনে ব্যাটিং পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের জন্য লিটনের সামনে ভালো সুযোগ টেস্টে রান করা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ভালো করলে পাকিস্তান সফরে ওয়ানডে সিরিজের দলে থাকবেন তিনি। লিটন ধারাবাহিক হলে টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য অনেক কাজই সহজ হয়ে যাবে। বিশেষ করে নেতৃত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। অধিনায়ক নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নেব। খুব শিগগির জানা যাবে (কে অধিনায়ক)। এরই মধ্যে দুই-একজন টি২০-এর অধিনায়কত্ব করেছেন, যারা এখনও দলের বাইরে নয়। এ রকম কাউকে আমরা চেষ্টা করব।’
টি২০ দলের অধিনায়ক হিসেবে তাসকিন আহমেদের নামও আলোচনায় আছে। গত টি২০ বিশ্বকাপে শান্তর ডেপুটি ছিলেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁরই নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। কোনো এক অজানা কারণে তাসকিনের পরিবর্তে লিটনকে বেছে নেয় বিসিবি। ২০২৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপের নেতৃত্বে লিটনকে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা পরিচালকদের। এখন থেকে অধিনায়কের পাশাপাশি সহ-অধিনায়কও নির্বাচন করা হবে বলে জানা গেছে। একইভাবে জাতীয় দল নির্বাচনেও গাইডলাইন তৈরি করতে যাচ্ছে বিসিবি।
ফারুক বলেন, ‘বোর্ড থেকে একটা পলিসি দেওয়া হবে। আমরা বলে দেব কী চাই। ক্রিকেট অপারেশন্সের সঙ্গে আলাপ করে চিন্তা করব, আমাদের ক্রিকেটকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়।’ এই পলিসি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোম সিরিজ থেকেই দেখা যেতে পারে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ