মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি হেনস্তা, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়ে আইনি সংস্কারের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরপর কাটাপাহাড় রোড হয়ে বিজয় ২৪ হলের সামনে গিয়ে থামে। এ সময় ওই হল থেকে শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রতিবাদ জানান। বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে নারী শিক্ষার্থীরা মশাল হাতে মিছিল করেন।  অন্যান্য ছাত্রী হল প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাস হয়ে জিরো পয়েন্ট গেটে অবস্থান নেন।

বিক্ষোভকারীরা জানান, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই দেশে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বাড়ছে। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, দরকার হলে আমরা আরেকটি জুলাই নিয়ে আসব। তাও ধর্ষকদের ফাঁসির মঞ্চে ঝুলাতে হবে।

ইংরেজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নওশিন তাবাসসুম জুথি বলেন, আইনি জটিলতার কারণে ধর্ষকরা বারবার খালাস পেয়ে যায়। আমরা সেই আইন সংস্কার চাই এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি।

নারী অঙ্গনের মুখপাত্র সুমাইয়া শিকদার বলেন, আমরা এখনও নিরাপদ নই। নিজের ক্যাম্পাসেই নিজেকে অনিরাপদ মনে হয়। এই অমানুষদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে, যেন তারা কোনোভাবেই আইনের ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ