হেনস্তা, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে চবিতে মশাল মিছিল
Published: 9th, March 2025 GMT
মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি হেনস্তা, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবি জানিয়ে আইনি সংস্কারের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। এরপর কাটাপাহাড় রোড হয়ে বিজয় ২৪ হলের সামনে গিয়ে থামে। এ সময় ওই হল থেকে শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রতিবাদ জানান। বিভিন্ন হল থেকে বেরিয়ে নারী শিক্ষার্থীরা মশাল হাতে মিছিল করেন। অন্যান্য ছাত্রী হল প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাস হয়ে জিরো পয়েন্ট গেটে অবস্থান নেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই দেশে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বাড়ছে। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, দরকার হলে আমরা আরেকটি জুলাই নিয়ে আসব। তাও ধর্ষকদের ফাঁসির মঞ্চে ঝুলাতে হবে।
ইংরেজি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নওশিন তাবাসসুম জুথি বলেন, আইনি জটিলতার কারণে ধর্ষকরা বারবার খালাস পেয়ে যায়। আমরা সেই আইন সংস্কার চাই এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করছি।
নারী অঙ্গনের মুখপাত্র সুমাইয়া শিকদার বলেন, আমরা এখনও নিরাপদ নই। নিজের ক্যাম্পাসেই নিজেকে অনিরাপদ মনে হয়। এই অমানুষদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে, যেন তারা কোনোভাবেই আইনের ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।