প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনি ট্রেনের হুইসেল প্রধান উপদেষ্টা বাজিয়ে দিয়েছেন। ডিসেম্বর অথবা আগামী জুনের মধ্যে নির্বাচন। ডিসেম্বরে ভোটের টার্গেট।
সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, উনারা এসেছিলেন সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে। তারা নির্বাচনে সহায়তা করতে চান। বিদেশি পর্যবেক্ষক সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমরা দল নিবন্ধন, ভোটার নিবন্ধন সম্পর্কে জানিয়েছি। শিগগিরই ক্রয় প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি। বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা পরিবর্তন হবে না, তবে দেশিটা হবে। যথাসময়ে পর্যবেক্ষক আসার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেব।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরে টার্গেট রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডিসেম্বরে ভোট করতে হলে তো অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। আমরা যাতে ওই টাইমলাইনটা মিস না করি, সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাদের কাছ থেকে কী ধরনের সহায়তা নিতে পারি, তা বলেছি। যেমন: নির্বাচনি এজেন্টরা নিয়ম-নীতি জানেন না। একটা পার্টির কর্মী বা প্রার্থীর পরিচিতকে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়, সে আইন-কানুন কিছু জানে না। তাদের যদি একটা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারতাম, এটা বলেছি।
সিইসি আরো বলেন, এখন পর্যবেক্ষক আসবে। বাংলাদেশ সম্পর্কে জানে না, এমন এক জনকে কেউ নিয়ে আসলো; আমাদের বাস্তবতা সম্পর্কে জানে না, তখন তাদের রিপোর্টিং তো প্রপার হবে না। পর্যবেক্ষক তো দিই আমরা রিপোর্ট করার জন্য। এখন আইন-কানুন, নিয়ম সম্পর্কে ধারণা যদি না থাকে; তাই তাদের আমরা অনুরোধ করেছি নির্বাচনের আগে পর্যবেক্ষকদের একটা ট্রেনিং দেওয়ার জন্য। পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব কী, সে সম্পর্কে ট্রেনিং; নির্বাচনের পর তাদের কী দায়িত্ব থাকতে পারবে, সে ট্রেনিংয়ের জন্য বলেছি। তারা বলেছে, সাহায্য করবে। তারা আমাদের প্রোগ্রেস নিয়ে সন্তুষ্ট। আমরা বলেছি, আপনারা হেল্প করলে ওয়েলকাম।
ঢাকা/হাসান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড স ম বর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।