আদিবাসী জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসবে ছুটির দাবি
Published: 10th, March 2025 GMT
পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলো নতুন বছর বরণকে কেন্দ্র করে তাঁদের প্রধান সামাজিক উৎসবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি ছুটি রাখাসহ চার দফা দাবি জানানো হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে ১২টি আদিবাসী ছাত্রসংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএমএসসি ঢাকা মহানগরের নুমং প্রু মারমার সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি।
লিখিত বক্তব্যে অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, আবহমান কাল ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাংখোয়া, চাক, খুমি, লুসাই, ম্রো, বম, খেয়াং, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা, অহমিয়া, গুর্খা ও সান্তাল—এই ১৪টি ভিন্ন ভাষার আদিবাসী জাতির বসবাস। তাঁদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রথা ও রীতি বাঙালি জাতি থেকে পৃথক ও স্বতন্ত্র। বাঙালির যেমন নববর্ষ উৎসব রয়েছে, তেমনি পাহাড়ের আদিবাসী জনগোষ্ঠীও বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঐতিহ্যগতভাবে বিভিন্ন নামে প্রধান সামাজিক উৎসব চৈত্রসংক্রান্তি এবং নতুন বছরকে বরণ উদ্যাপন করে আসছে। উৎসবটিকে ম্রোরা চাংক্রান, চাকরা সাংগ্রাইং, মারমারা সাংগ্রাই, ত্রিপুরারা বৈসু, তঞ্চঙ্গ্যারা বিষু, অহমিয়ারা বিহু, খুমিরা সাংক্রাই, চাকমারা বিজু এবং সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠী রাখাইনরা থাংগ্রেন নামে স্বকীয় ও ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক আয়োজনে উদ্যাপন করে থাকেন।
বাংলাদেশে আদিবাসীদের প্রধান এই সামাজিক উৎসবটি উপলক্ষে সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি–বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আদিবাসী শিক্ষার্থীরা, সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি চাকরিজীবী ও কলকারখানার শ্রমিকেরা পরিবারের সঙ্গে উৎসবটি উদ্যাপন করার সুযোগ থেকে বছরের পর বছর ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছে। অন্যদিকে শহরে বসবাসরত আদিবাসী শিশু ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। অথচ বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের জন্য প্রতিবছর সরকারি–বেসরকারি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি দেওয়া।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নির্বিঘ্নে উৎসব উদ্যাপনের তাগিদে দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলো এই উৎসবের দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা ও কোনো ধরনের পাবলিক পরীক্ষা না রাখতে দাবি জানিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিলেও কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উপরন্তু ক্লাস–পরীক্ষার রুটিন দিয়ে একাডেমিক ক্যালেন্ডার চালু রেখেছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে ঢাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১২ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মোট পাঁচ দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা; উৎসবের সময় এসএসসি ও এইচএসসিসহ কোনো পাবলিক পরীক্ষা না রাখা; উৎসবের সময় দেশের সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিতসহ সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আদিবাসী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি প্রদান এবং উৎসবের সময় দেশের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কর্মরত আদিবাসী শ্রমজীবীদের ছুটি দেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পিসিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রুমেন চাকমা, হিল উইমেনস ফেডারেশনের সভাপতি শান্তি দেবী তঞ্চঙ্গ্যা, ঢাকায় ম্রো শিক্ষার্থী পরিবারের পায়া ম্রো, বাংলাদেশ চাক স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী তথ্য ও প্রচার সম্পাদক উথান চাক, টিএসএফের কর্ণজ্যোতি ত্রিপুরা, বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ফোরামের সদস্য স্নেহলাল তঞ্চঙ্গ্যা, বম ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে লাললিং বম, বাংলাদেশ খুমি স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সদস্য সাংখেঅং খুমি ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ম জ ক উৎসব ব সরক র জনগ ষ ঠ উৎসব র
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে সালাহ-ফন ডাইকদের কাছে এই শিরোপা বিশেষ
একসময় ইংলিশ ফুটবলের রাজা তারাই ছিল। ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত তো বলতে গেলে লিভারপুলেরই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে। তখন অবশ্য নামটা প্রিমিয়ার লিগ ছিল না, ছিল প্রথম বিভাগ লিগ। ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগ নাম হওয়ার পর থেকে যেন লিভারপুলের দুর্ভাগ্যের শুরু। প্রথম বিভাগ যুগে ১৮টি লিগ জেতা লিভারপুল প্রিমিয়ার লিগ যুগে এসে জিততেই ভুলে গেল!
প্রিমিয়ার লিগে শুরু হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একচ্ছত্র রাজত্ব। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীন ১৩বার লিগ জিতে ইউনাইটেডের মোট লিগ শিরোপা হয়ে গেল ২০টি। লিভারপুলকে পেরিয়ে তারা হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব।
ইউনাইটেডের সেই আধিপত্যও শেষ হলো ২০১৩ সালে ফার্গুসনের অবসরের পর। কিন্তু রাজত্ব ফিরে পেল না লিভারপুল। ইংলিশ ফুটবলের নতুন রাজা হয়ে ওঠল ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার অধীন সর্বশেষ সাত মৌসুমে ছয়বার শিরোপা জিতে সিটি একের পর এক নতুন রেকর্ড গড়তে থাকল।
আরও পড়ুনলাল সমুদ্রে গোল উৎসবে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল১১ ঘণ্টা আগেমাঝে ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩০ বছর পর লিভারপুল পেল ইংলিশ লিগের শিরোপার স্বাদ। তবে পৃথিবী তখন করোনা মহামারি চলছে। শিরোপা উৎসব হলো না লিভারপুলের মনের মতো।
এবার আর্নে স্লটের অধীন প্রথম মৌসুমেই আবার চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। সেটাও কী রাজকীয়ভাবে! চার ম্যাচ হাতে রেখে, নিজেদের মাঠ অ্যানফিল্ডে, ভরা গ্যালারির সামনে। লিভারপুলের এটি ২০তম লিগ শিরোপা, ইউনাইটেডের সঙ্গে যৌথভাবে তারাও এখন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাব।
ইতিহাস গড়া এই ট্রফি জেতার পর কী বলছেন লিভারপুলের খেলোয়াড়েরাকোডি গাকপোর উদ্যাপন