রাবি নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ
Published: 12th, March 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রীকে শারীরিক হেনস্তা ও মারধর করেছেন বহিরাগত এক যুবক। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থীকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত তন্ময়ের রাবি সংলগ্ন রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার অন্তর্গত আমজাদের মোড় এলাকায়। তিনি হ্যাট্রিক ক্যাফে নামে একটি ক্যাফের মালিক।
বুধবার (১২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেইটে এ ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন:
লাকি আক্তারের গ্রেপ্তার দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
রাবিতে শিবির-ছাত্রদল এক মঞ্চে
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে ইংরেজী বিভাগের একজন নারী শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে হাতাহাতির সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে তন্ময় ওই দুই শিক্ষার্থীকেই মারধর করেন।
এদিকে, ঘটনা চলাকালে ফেসবুকে লাইভ করেন ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ফারহান মাহমুদ। ফারহানের লাইভ ভিডিওর সূত্র ধরে নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেন শিক্ষার্থীরা।
লাইভ ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্ত তন্ময় এক নারী শিক্ষার্থীকে মারতে উদ্যত হন এবং রিকশায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে হেনস্তাকারী যুবক তন্ময় রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহানের দিকে তেড়ে আসে এবং এরপরই লাইভটি বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারহান বলেন, “আমি আমার বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে কাজলা গেইটে বাজার করছিলাম। এমন সময়ই আমার সঙ্গে থাকা বান্ধবীকে ইভটিজিং করেন এক যুবক। আমরা প্রতিবাদ করায়, তন্ময় নামের ছেলেটি আমাকে ও আমার বান্ধবীর উপর চড়াও হয় এবং আমরা শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হই।”
তিনি বলেন, “এরপর ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী একত্রিত হলে তন্ময় নামের এই ছেলেটি আমাকে এবং আমার বান্ধবীকে আবারো মারধর করার জন্য তেড়ে আসে। একজন নারী শিক্ষার্থীকে এভাবে হেনস্তা এবং এরপর মারধর করা, তাও আবার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে? আমরা মামলা করেছি; এ ঘটনা সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।”
এ ঘটনার বিচার চেয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফেরদৌস মিনার বলেন, “আজকে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে আমাদের সহপাঠীর সঙ্গে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমাদের বাকি শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিহান। আমরা পুলিশকে সেই কালপ্রিট এর নাম, পরিচয়, ঠিকানা, ফেইসবুক আইডি এবং তার ছবি দিয়েছি। আশা করি তাকে আজকে রাতের মধ্যেই গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “ঘটনা শোনার পরপরই আমার পুরো প্রক্টোরিয়াল বডিকে সেখানে পাঠাই। এছাড়া আরো কয়েকজন শিক্ষকও ছিলেন। আমি মতিহাত থানার ওসিকেও বিষয়টি ইনফর্ম করি। আমরা চাই, অভিযুক্ত এই ছেলেটিকে যেন দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।”
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেইটের সামনে আজ দুপুরের একটি ঘটনার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে বাসদ কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান, আটক ২২
ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলন কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে নগরের আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয় থেকে তাদের আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বাসদ নেতারা অভিযোগ করেছেন, সকালে নিয়মিত পাঠচক্র চলাকালে হঠাৎ পুলিশ কার্যালয় ঘেরাও করে নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা দিল শিবির
বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে এগিয়ে নিতে সিকৃবি উপাচার্যের অঙ্গীকার
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও আজ (শনিবার) ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা নগরে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। গ্রেপ্তারদের নাম পরবর্তীতে জানানো হবে।’’
বাসদের সিলেট জেলা সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘‘ব্যাটারিচালিত রিকশার ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ (শনিবার) চৌহাট্টা থেকে আমাদের পূর্বঘোষিত ‘ভুখা মিছিল’ কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে পুলিশ নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর আমরা কর্মসূচি স্থগিত করি। তবে সব শ্রমিককে তা জানানো সম্ভব হয়নি। সকালে শহীদ মিনার এলাকায় কয়েকজন শ্রমিক জড়ো হন। কিন্তু কার্যালয়ে শুধু পাঠচক্র চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২২ নেতাকর্মীকে ধরে নিয়ে গেছে।’’
এর আগে একই ইস্যুতে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মধ্যরাতে নগরের আখালিয়া কালীবাড়ী এলাকার বাসা থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সুমনকেও আটক করে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকরা। ওই সময় আনোয়ার হোসেন সুমনসহ কয়েকজন বামঘরানার রাজনীতিকও আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনকারীরা ব্যাটারি রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তা মেনে নিতে রবিবার (২ নভেম্বর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। সেই আলটিমেটাম শেষ হওয়ার একদিন আগে সিপিবির সুমন ও বাসদের ২২ নেতাকর্মীকে আটক করা হলো।
শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাটারি রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ইন্ধন দিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে সংঘাতের আশঙ্কায় রবিবারের কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’
গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরীর উদ্যোগে পরিচালিত এই অভিযানে শতাধিক রিকশা জব্দ ও একাধিক চার্জিং পয়েন্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর থেকে নগরে ব্যাটারি রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকা/নুর/বকুল