ষড়যন্ত্র রুখতে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন দিন : আমিনুল হক
Published: 13th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করতে আওয়ামী লীগের দোসররা পার্শ্ববর্তী একটি দেশের সহযোগিতায় দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক।
বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর সিদ্ধান্ত হাই স্কুল মাঠে দারুস সালাম থানা বিএনপির কর্মীসভা ও রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ও গণমাধ্যমে বসে থাকা আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসররা বিদেশি প্রভুর সহযোগিতায় বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করার অপচেষ্টা করছে। তারা চেষ্টা করছে কিভাবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণিত করা যায়।”
তিনি বলেন, “অন্তবর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবেনা। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে।”
ষড়যন্ত্র রুখতে দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, “গত ছয় মাসে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে কোন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীলতা আসেনি। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা বার বার বলছি দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে দ্রুত নির্বাচন দিন। জনগণ দ্রুত নির্বাচন প্রত্যাশা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগণের সরকারই পারবে স্বৈরাচার হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের মাধ্যমে দেশ পরিপূর্ণ স্বৈরাচার মুক্ত করতে।”
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, “জনগণকে সাথে নিয়েই আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। বাংলাদেশের মানুষের যে মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক মূল্যবোধ, মানুষের যে দৈনন্দিন চাহিদা ও মৌলিক চাহিদাগুলো রয়েছে- সকল চাহিদা পূরণের মাধ্যমেই আমরা বাংলাদেশের মাটিতে একটি সুস্থ ধারার রাজনীতির পরিবেশ তৈরি করতে পারব।”
তিনি বলেন, “আজকে দেশের দ্রব্যমূল্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। জিনিসপত্রের দাম দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। কারণ এখনও পর্যন্ত সিন্ডিকেট স্বৈরাচারের হাতেই রয়েছে। মানুষকে স্বস্তি দিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্য মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে।”
আমিনুল হক বলেন, “মানুষ সুষ্ঠুভাবে যাতে ভোট করতে না পারে সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিল শেখ হাসিনা।
সাধারণ মানুষ তখন ভোট দিতে পারেনি। ভয়াবহ নির্বাচন দেখেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মামলা দিয়ে নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছে। বিদেশি প্রভূদের সহযোগিতায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল আওয়ামী লীগ।”
তিনি বলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ধ্বংসস্তুপ রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের জন্যই ৩১ দফা রুপরেখা দিয়েছেন। ৩১ দফার রুপরেখার মাধ্যমেই আমরা একটি আগামীর সুন্দর সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারব।”
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড.
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টির সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্য হাফিজুল হাসান শুভ্রর সঞ্চালনায় কর্মশালায় বক্তব্য দেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুন্সি বজলুল বাসিত আন্জু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মো. মোস্তফা জামান, মহানগর যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন,এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, গাজী রেজওয়ান উল হোসেন রিয়াজ, হাজী মো. ইউসুফ, আফাজ উদ্দিন, শাহ আলম, মাহাবুব আলম মন্টু, মহানগর সদস্য আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, শামীম পারভেজ, মোজাম্মেল হোসেন সেলিম, হুমায়ুন কবির রওশান, আশরাফুজাহান জাহান, রেজাউর রহমান ফাহিম, ডা. এ কে এম কবির আহমেদ রিয়াজ, মনিরুল আলম রাহিমী, হাজী নাসির উদ্দিন, নুরুল হুদা ভূঁইয়া নূরু, এম এস আহমাদ আলী, ইব্রাহিম খলিল, জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, তাসলিমা রিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি রবিউল আউয়াল, মাসুদ খান, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তর এর সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ, স্বেচ্ছাসেবকদল উত্তরের আহবায়ক শেখ ফরিদ হোসেন, জাসাস মহানগর সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনু, খিলক্ষেত থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক সিএম আনোয়ার হোসেন, ক্যান্টনমেন্ট থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক মো. শফিকুর রহমান রতন, মোহাম্মদপুর থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক মীর মো. কামাল হোসেন, দারুসসালাম থানা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর হোসেন ভুট্টো, দারুসসালাম থানা বিএনপি নেতা একেএম নজরুল ইসলাম কোহিনুর, সৈয়দ ওয়াহীদুল আলম লাবু, তুরাগ থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটি সদস্য আব্দুল আলী প্রমুখ।
এরপরে আমিনুল হক পল্লবী ও রুপনগরে পাঁচটি স্পটে ইফতার বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
ঢাকা/সুকান্ত/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সদস য রহম ন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।