লাইনে দাঁড়ানো নিম্ন আয়ের বেশ কয়েকজন মানুষ। সবার হাতে একটি করে এক টাকার কয়েন। জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, ঈদের মালপত্র কিনতে এসেছেন। এমন মানুষগুলোর মুখে মুখে এখন এক টাকার বাজারের নাম।
সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য এক টাকায় ঈদের সদাই করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শাশ্বত-৯২ বন্ধু ফোরাম নামে একটি সংগঠন।
শনিবার সিলেটের গোলাপগঞ্জের একটি বাগানে এই এক টাকার বাজার বসানো হয়। এদিন বিশেষ এই বাজার থেকে শতাধিক পরিবার এক টাকায় ঈদের বাজার করেছেন। এই ফোরাম প্রতিবছর ঈদ ও পূজায় সাধারণ মানুষকে এক টাকায় সদাই করে দেওয়ার সুযোগ করে দেয়।
এক টাকায় ঈদের বাজারে পুরুষদের জন্য ছিল লুঙ্গি অথবা পাঞ্জাবি। এ ছাড়া ছিল এক প্যাকেট সেমাই। আর নারীদের জন্য ছিল শাড়ি ও এক প্যাকেট সেমাই। এক টাকার বিনিময়ে পছন্দসই লুঙ্গি বা পাঞ্জাবি কিনে নেন সুবিধাভোগীরা। এক টাকায় ঈদবাজার করতে পেরে খুশি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষজন।
সুবিধাভোগী মায়া বেগম বলেন, ১ টাকা দিয়ে শাড়ি আর সেমাই পাবো ভাবতে পারিনি। গেল দুই বছর টাকার অভাবে নিজের জন্য কেনাকাটা হয়নি। এক টাকায় পেয়েছেন একটি শাড়ি ও সেমাই। গরিব মানুষ কিছুটা হলেও সবার সঙ্গে ঈদ করতে পারবেন। পাশেই ছিলেন ছালেহা বেগম, রুবেনা বেগম, নানু মিয়া, কুটি মিয়া, আব্দুর রহমানসহ আরও অনেকেই। তারাও এক টাকায় ঈদের বাজার করতে পেরে আনন্দিত।
নানু মিয়া বলেন, এক সময় এক টাকায় অনেক কিছু মিলত। নিজেও এক টাকা দিয়ে অনেক জিনিস কিনেছি। ৬৫ বছরের জীবনে ১ টাকার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। ১ টাকায় লুঙ্গি কিনলাম আমার পছন্দমতো। সঙ্গে দিল এক প্যাকেট সেমাই।
আয়োজক মলয় দত্ত মিঠু বলেন, সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। ঈদে তারা নতুন কাপড় কিনতে পারে না, ভালো-মন্দ খাওয়ার অবস্থাও থাকে না। তাই তাদের এমন উদ্যোগ মানুষের মুখে খুশির হাসি ফোটাতে।
১ টাকার সদাই বিক্রি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন সিলেট প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্টের (ইমজা) সভাপতি আশরাফুল কবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাশ্বত-৯২ বন্ধু ফোরামের সভাপতি ধনঞ্জয় কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক শংকর চক্রবর্তী শংকু, সদস্য মলয় দত্ত মিঠু, অশোক দাস, নিহার কান্তি রায়, সঞ্জিব দত্ত টিটু, ধীমান কান্তি দে, উত্তম পাল সনি, আলভিনা গার্ডেনের পরিচালক আব্দুর রব রুবেল, সাবেক মেম্বার মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।