বজ্রপাত বাড়ার পেছনে পরিবেশদূষণের কোনো সম্পর্ক আছে কি
Published: 17th, March 2025 GMT
সারা বিশ্বে বজ্রপাত খুব সাধারণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। যদিও এই প্রাকৃতিক ঘটনার কারণে প্রতিবছরই অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতকে বলা হয় প্রকৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী শক্তির মধ্যে একটি। প্রাকৃতিক ঘটনা হলেও বিশাল মালবাহী জাহাজ থেকে নির্গত সালফার কণার দূষণ বজ্রপাতকে প্রভাবিত করছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
গবেষকদের তথ্যমতে, জাহাজে যখন জ্বালানি পোড়ানো হয়, তখন বাতাসে ক্ষুদ্র অ্যারোসল কণা ছড়িয়ে যায়। এসব কণা মেঘ গঠনের সময় জলীয় বাষ্পকে পানির ফোঁটায় ঘনীভূত করে বরফের স্ফটিক আকারে জমা হয়। ঝড়ের সময় এসব স্ফটিকের মধ্যে সংঘর্ষ বেশি হওয়ায় বৈদ্যুতিক চার্জ উৎপন্ন হয়ে বজ্রপাত তৈরি হয়। নতুন এই তথ্যের বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। এর ফলে বিভিন্ন শিল্পের দূষণ বৈশ্বিক বজ্রপাতের ধরনকে আসলেই পরিবর্তন করছে কি না, তা–ও জানা সম্ভব হবে।
সিঙ্গাপুর পৃথিবীর অন্যতম ব্যস্ত শিপিং এলাকা। আর তাই দেশটির জাহাজ চলার পথে বজ্রপাতের ঘটনা বেশি দেখা যায়। তবে ২০২০ সালে নতুন একটি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিভিন্ন জাহাজকে সালফার নির্গমন কমাতে বাধ্য করার পর জাহাজ চলাচলের পথে বজ্রপাতের ঘটনা অর্ধেক কমে গেছে। সিঙ্গাপুর বন্দরের কাছেও বজ্রপাতের এ প্রবণতা শনাক্ত করা হয়েছে।
গবেষকদের তথ্যমতে, সালফার নির্গমন হ্রাস করার কারণে এখন জাহাজ থেকে কম পরিমাণে সালফার কণা বায়ুমণ্ডলে জমা হচ্ছে। এর ফলে ঝড়ের সময় মেঘে কম পরিমাণে বরফের স্ফটিক তৈরি হচ্ছে। এতে কম বৈদ্যুতিক চার্জ তৈরি হওয়ায় বজ্রপাত কম শক্তিতে পৃথিবীতে আঘাত হানছে।
সূত্র: বিজিআর
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।