সিলেটে ১৫০ একর জমি দখল: বিএনপি নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ
Published: 19th, March 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে সরকারি জায়গা দখলে অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনকে দলের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সাহাব উদ্দিন জুলাই বিপ্লব তথা ৫ আগস্টের পর দেড়শত একর সরকারি জমি দখলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এমন খবর গণমাধ্যমে আসার পর সিলেট জেলা বিএনপি সাহাব উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। অভিযোগ তদন্তে জেলা বিএনপি তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করেছে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে শোকজের তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি গণমাধ্যমে সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ প্রকাশিত হয়েছে, যা বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থি বলে বিবেচিত হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগ, দলের নীতি ও আদর্শের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ আচরণ পরিলক্ষিত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
১৭ বছরের কারাদণ্ড থেকে খালাস বাবর
নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত না করে, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন: রিপন
সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এর সুস্পষ্ট লিখিত ব্যাখ্যা আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে দেওয়ার জন্য শোকজে উল্লেখ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য জবাব দিতে না পারলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে বলা হয়।
দেশের সবচেয়ে বড় পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জে। কোয়ারীর পাশে সরকারের অন্তত ২৭৫ একর উন্মুক্ত জায়গা আছে। ২০০১ সালের দিকে এসব জায়গার দখল নেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। এর মধ্যে সাহাব উদ্দিনের দখলে চলে যায় অর্ধেকের বেশি জমি। পাশে কোয়ারি থাকায় দখলকারীরা জায়গাগুলো পাথর ভাঙার মেশিনের মালিকদের কাছে ভাড়া দেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে মিলেমিশে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিয়েছেনে সাহাব উদ্দিন। বিগত সরকারের শেষের দিকে দুই বছর আগে প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে। গত ৫ আগস্ট পরবর্তিত পরিস্থিতিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে ১০ নম্বর সাইট এলাকায় সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ ওঠে সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। সেখান থেকে লাখ লাখ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর টনক নড়ে দলের।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাহাব উদ্দিনকেও এ ঘটনায় লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন ও কারণ দর্শানোর জবাব পাওয়ার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বিএনপি জিরো টলারেন্সে রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে সাহাব উদ্দিনকে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ঢাকা/নুর/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র ব যবস থ সরক র গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব