ভূমি সংস্কার বোর্ডে নিয়োগ, আবেদন অনলাইনে
Published: 20th, March 2025 GMT
ভূমি সংস্কার বোর্ড নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ভূমি সংস্কার বোর্ড ও বোর্ডের আওতায় বিভাগীয় উপভূমি সংস্কার কমিশনার কার্যালয়ের জন্য শূন্য পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য এ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। ২০ মার্চ থেকে আবেদন শুরু হয়েছে। আবেদন করা যাবে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
১.
পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ১টি
বেতন: ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা (গ্রেড-১৩)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি
২.
পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ১টি
বেতন: ১০২০০-২৪৬৮০ টাকা (গ্রেড-১৩)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি
৩.
পদের নাম: গাড়িচালক
পদসংখ্যা: ৩টি
বেতন: ৯৩০০-২২৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। হালকা গাড়িচালনায় বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।
৪.
পদের নাম: অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ৩টি
বেতন: ৮২৫০-২০০১০ টাকা (গ্রেড-২০)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ
আরও পড়ুনতিন বছর পর সমবায় অধিদপ্তরের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি, পদ ৫১১ ১৫ ঘণ্টা আগে৫.
পদের নাম: নিরাপত্তা প্রহরী
পদসংখ্যা: ১টি
বেতন: ৮২৫০-২০০১০ টাকা (গ্রেড-২০)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ;
৬.
পদের নাম: পরিচ্ছন্নতাকর্মী
পদসংখ্যা: ১টি
বেতন: ৮২৫০-২০০১০ টাকা (গ্রেড-২০)
শিক্ষাগত যোগ্যতা: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি)) বা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেডিসি) অথবা ৮ম শ্রেণি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ;
আরও পড়ুনএকসময় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন, এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসার১৯ মার্চ ২০২৫আবেদনের বয়সসীমা: ১-৩-২০২৫ তারিখে বয়স ১৮ থেকে ৩২ বছর হতে হবে।
আবেদন ফি
১ থেকে ৩ নং পদের জন্য টেলিটকের সার্ভিস চার্জসহ মোট ১১২ টাকা, ৪ থেকে ৬ নং পদের জন্য সার্ভিস চার্জসহ মোট ৫৬ টাকা এবং সব গ্রেডে অনগ্রসর নাগরিকের (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ) জন্য ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা এসএমএসের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
আবেদন যেভাবে: আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন করতে ও আবেদনের বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুনে
আরও পড়ুনপেছাল গণিত পরীক্ষা, এসএসসি-২০২৫-এর নতুন রুটিন প্রকাশ১৯ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদ র ন ম পর ক ষ য সমম ন র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।
‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা
শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।
শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫ঐতিহাসিক পটভূমি
মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা
মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।
আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’
সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট
আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪