ছাত্র-শিক্ষকদের উপস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। মূলত কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগকে বিলোপ করার লক্ষ্য নিয়ে এ আদেশটি দেওয়া হয়েছে।

স্কুলের নীতিমালাকে প্রায় পুরোপুরিভাবে অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় বোর্ডের হাতে ছেড়ে দেওয়ার উপযোগী করে নির্বাহী আদেশটি তৈরি করা হয়েছে। ট্রাম্পের এ পদক্ষেপটি উদারপন্থী শিক্ষাকর্মীদের উদ্বেগে ফেলেছে।

গতকাল হোয়াইট হাউসের ইস্ট রুমে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, আদেশটি শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করার প্রথম পদক্ষেপ।

আরও পড়ুনট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগ বন্ধ করতে চান, পারবেন কি ১২ জানুয়ারি ২০২৫

মার্কিন শিক্ষা বিভাগকে পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। তবে এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট নেই।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা শিক্ষায় ফিরতে যাচ্ছি। এটা খুব সাধারণ বিষয়। আর তা হলো, এটিকে ((শিক্ষাকে) অঙ্গরাজ্যগুলোতে ফিরিয়ে নেওয়া, যা এর শিকড়।’

ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত তরুণ শিক্ষার্থীরা ট্রাম্পকে ঘিরে বসে ছিল। ট্রাম্পের পাশাপাশি তারাও তাদের নিজস্ব নকল নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছে।

এর আগে গত সপ্তাহে শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, তারা তাদের প্রায় অর্ধেক কর্মীকে ছাঁটাই করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমাতে ট্রাম্পের তৎপরতার অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রক্ষণশীলরা চান শিক্ষাবিষয়ক নীতিমালা ও স্কুল বাছাইয়ের সুযোগের ওপর স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ থাকুক, তা বেসরকারি ও ধর্মীয় স্কুলগুলোকে সুবিধা দেবে। আর বামপন্থী ধারার ভোটারেরা ব্যাপকভাবে সরকারি স্কুল ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মসূচিগুলোতে ভালো রকমের তহবিল দেওয়ার পক্ষে।  

তহবিল কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। তিনি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বৈচিত্র্য, সমতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিগুলো বাদ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। উদাহরণস্বরূপ, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলা যায়। সেখানে স্থগিত হওয়া কেন্দ্রীয় তহবিলের ৪০ কোটি ডলার পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আলোচনা শুরু করার পূর্বশর্ত হিসেবে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের ওপর বিধিনিষেধ কঠোর করতে বলা হয়েছে। হোয়াইট হাউস মনে করে, শিক্ষা বিভাগ হলো অর্থের অপচয়।

গতকাল নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে টেক্সাসের গ্রেগ অ্যাবট এবং ফ্লোরিডার রন ডেস্যান্টিসের মতো গভর্নরেরা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল ডেমোক্র্যাটরা স্বীকার করেছেন যে কংগ্রেসের কোনো পদক্ষেপ ছাড়াই কার্যত বিভাগটি বাতিল করতে পারেন ট্রাম্প।

গতকাল ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুরোপুরিভাবে বিভাগটি বন্ধ করে দিতে চান। তিনি আরও চান, শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন নিজেই চাকরি থেকে সরে যান। হোয়াইট হাউসের ওই অনুষ্ঠানে লিন্ডাও যোগ দিয়েছিলেন।

শিক্ষা বিভাগ  যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ লাখ সরকারি এবং ৩৪ হাজার বেসরকারি স্কুলের তহবিল তত্ত্বাবধান করে থাকে। যদিও সরকারি স্কুলের ৮৫ শতাংশেরও বেশি তহবিল অঙ্গরাজ্য এবং স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে আসে। অর্থসংকটে থাকা স্কুল এবং কর্মসূচিগুলোর জন্য কেন্দ্রীয় অনুদান প্রদান করে থাকে এ বিভাগ। যেমন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার জন্য অর্থ, শিল্পকলা সংক্রান্ত কর্মসূচির জন্য তহবিল এবং পুরোনো অবকাঠামো প্রতিস্থাপনের কাজ করে থাকে।

সরাসরি কলেজের খরচ বহন করতে পারে না এমন শিক্ষার্থীদের ঋণ দেওয়ার কাজটিও তত্ত্বাবধান করে তারা।

রিপাবলিকানেরা কংগ্রেসের দুই কক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সিনেটে এ ধরনের বিল পাস করাতে ৬০ ভোট নিশ্চিত করার জন্য ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন প্রয়োজন হবে। গতকাল ট্রাম্প বলেছেন, শিক্ষা বিভাগকে পুরোপুরি বন্ধ করতে শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি কংগ্রেসে ভোটাভুটির জন্য উত্থাপন করা হতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট র ম প বল অন ষ ঠ ন র জন য তহব ল গতক ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুই উপদেষ্টার গড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।

বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে অবৈধভাবে গতিরোধ করা, সরকারি কাজে বাধা ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগে রোববার রাতে গোয়ানঘাট থানায় ১৫০ জনকে আসামি করে এ মামলা করেন থানার এসআই ওবায়েদ উল্লাহ। মামলার পর সোমবার ভোরে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- মামলার ৬নং আসামি কালিনগরের দেলোয়ার হোসেন দুলু, মোহাম্মদপুরের শাহজাহান মিয়া ও ছৈলাখেল অষ্টম খন্ডের বাসিন্দা ফারুক আহমেদ।

শনিবার সকালে জাফলং এলাকা পরিদর্শনে যান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তারা ফেরার পথে জাফলং পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিএনপির সংগঠনের নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে দুই উপদেষ্টার আটকে নানান স্লোগানে বিক্ষোভ করা হয়। ঘটনার পর গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে বহিষ্কার ও জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি আজির উদ্দিনকে শোকজ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমদ তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সমকালকে জানান, গতকাল রাতে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সদ্য বহিষ্কৃত গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে। দ্বিতীয় আসামি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সোহেল আহমদ, ওমর ফারুক, সুমন শিকদার, দেলোয়ার হোসেন দুলু, আব্দুস সালাম ও আব্দুল জলিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ