এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যা বিভক্তি তৈরি করে: নুরুল হক
Published: 23rd, March 2025 GMT
বর্তমান প্রেক্ষাপটে কয়েক দিন ধরে যে পরিস্থিতি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া, তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা শঙ্কা প্রকাশ করছি, দেশে আরেকটি এক–এগারো ঘটানোর কোনো চক্রান্ত বা ষড়যন্ত্র চলছে কি না।
কারণ, দীর্ঘ ১৬ বছর যে ফ্যাসিবাদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছিল, আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, তারা কোনো দুর্বল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ছিল না। তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি ছিল। বৈদেশিক সমর্থন ছিল। দেশের মধ্যে ব্যবসায়ী সমাজ থেকে শুরু করে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যেও তাদের একটা শক্ত অবস্থান ছিল।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবসা–বাণিজ্য সর্বক্ষেত্রে তাঁর সুবিধাভোগীরা এখনো দেশে অবস্থান করছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি মহল, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি তৈরি করার জন্য বর্তমান ছাত্র নেতাদের বিভ্রান্ত করছে। ছাত্রদের সঙ্গে রাজনৈতিক দল, সামরিক বাহিনী বা সরকারের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি করছে।
এখানে আমাদের পরিচিত ছাত্রনেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছিলেন, সেই ঘটনাটি যদি সত্য হয়ে থাকে, তাদের সঙ্গে সেনানিবাসে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এমন আলাপ–আলোচনা করেছিল, বিষয়টি নিয়ে আরও আগে একটি শক্ত প্রতিবাদ দেখানোর দরকার ছিল। সেটি না করে তার বেশ কয়েক দিন পর গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া এবং সেটিকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি, সেটি আসলে অনাকাঙ্ক্ষিত। এরপর ফেসবুকে দেওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ভিডিও বক্তব্য দেখলাম। সেখানে তিনি মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করা নিয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাঁদের যে আলোচনা হয়েছিল, তা নিয়ে কথা বলেছেন। রাষ্ট্রীয় স্পর্শকাতর বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে তাঁদের আরও সচেতন, দায়িত্বশীল ও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
ছাত্রনেতারা, যাঁরা এ আন্দোলনের পরিচিত মুখ, তাঁদের মনে রাখতে হবে, এখন আর তাঁরা ছাত্র নন। তাঁরা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের জায়গায় আছেন। সুতরাং তাঁদের কোন কথায় প্রতিক্রিয়া তৈরি করে, সেটা ভাবা দরকার। এই মুহূর্তে কোনো দল বা রাজনৈতিক নেতাদের এমন কোনো ভূমিকা নেওয়া বা এমন কথা বলা উচিত হবে না, যেটা জাতির মধ্যে বিভক্তি তৈরি করবে। যেটা জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলবে। এমনটা হলে দেশে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে।
আমরা চাই অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কার এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতান্ত্রিক যাত্রা। যেই যাত্রা বিঘ্নিত করার জন্য পতিত স্বৈরাচার, তার দোসর এবং বিদেশি প্রভুরা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করবে। নানাভাবে তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করবে। সেই বিষয়ে যেন আমরা সচেতন থাকি।
নুরুল হক: সভাপতি, গণ অধিকার পরিষদ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একটি মহল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে: ডা. জাহিদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “একটি মহল নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। তারা বলে আগে নাকি গণভোট হতে হবে। দেশের মানুষ ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, এখন তারা ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছে। বাংলাদেশের জনগণ আজ ঐক্যবদ্ধ, তারা আর কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে মাথা নত করবে না।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মুকুন্দপুর মাদরাসা মাঠে মুকুন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত মিলন মেলায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
গণভোট নিয়ে ‘ক্রসরোডে’ সরকার
বিএনপির জুলাই সনদে ‘না’ বলার সুযোগ নেই: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
ডা. জাহিদ বলেন, “বিএনপি সমঅধিকারে বিশ্বাস করে। বিএনপি মনে করে, ধনি-গরিব, মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষের উন্নতি হলেই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, আধুনিক বাংলাদেশ হবে।”
তিনি বলেন, “যারা দেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছে তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বিএনপি কখনো পালায়নি। পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস বিএনপির নেই। বিএনপি হলো জনগণের পাশে থাকার দল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ইতিহাস, বেগম খালেদা জিয়ার ইতিহাস হলো সুখে-দুঃখে জনগণের পাশে থাকার ইতিহাস।”
মুকুন্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাকিম মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান রাজা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মিঞা শিরন আলম।
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ