বাকৃবির শাহজালাল হলে সম্প্রীতির ইফতার
Published: 23rd, March 2025 GMT
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শাহজালাল হলে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির ইফতার এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৩ মার্চ) ঈদের ছুটিতে নানা জটিলতায় এখনো বাসায় যেতে না পারা শিক্ষার্থী এবং হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে ওই হলের প্রশাসন। এতে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও সুশৃঙ্খল আবাসিক হল হিসেবে পরিচিত শাহজালাল হলে বরাবরই পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের চর্চা হয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়, যেখানে সিনিয়র, জুনিয়র কর্মকর্তা, কর্মচারী একত্র হয়ে ইফতার করেন।
হলের খেলার মাঠের খোলা আকাশের নিচে আয়োজিত এই ইফতার অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা একত্রে বসে ইফতার গ্রহণ করেন, যা তাদের ভ্রাতৃত্ববোধ আরও দৃঢ় করেছে। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়।
ইফতারে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় করে এবং হলে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে। সিনিয়র-জুনিয়র ও প্রশাসনের মধ্যকার সৌহার্দ্য বজায় রাখতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে হলের সাবেক শিক্ষার্থী ও বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আতিকুর রহমান বলেন, “শাহজালাল হলে আজ আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি এ পবিত্র রমজান মাসের বরকতময় সময়ে ইফতারের জন্য। ইফতার কেবল খাবার গ্রহণের একটি সময় নয়, এটি হলো সংযম, ধৈর্য, সহানুভূতি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক বিশেষ মুহূর্ত। ইফতার আমাদের শেখায় ধনী-গরিব নির্বিশেষে একসঙ্গে বসে খাবার ভাগ করে নেওয়ার। এ মিলনমেলা আমাদের মধ্যে ভালোবাসা, সহানুভূতি আর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো দৃঢ় করে।”
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদিউজ্জামান খান বলেন, “মানবজাতির জন্য রমজান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ মাস। এ পবিত্র মাসে হলের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির উদ্দেশ্যে এ ইফতার আয়োজন করা হয়, যা হলের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
তিনি বলেন, “এই ইফতারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় চর্চা করছে এবং নিজেদের মধ্যে ভাব বিনিময় করছে, যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন চলমান রাখা হবে।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য
প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।
ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।
আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছেপ্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।
স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।
তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩