দেশে ওয়ান-ইলেভেনের মতো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল এবং সদ্য গঠিত সংগঠনের বক্তব্য সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে। এর ফলে দেশে আবারও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আশঙ্কা বাড়ছে।

আজ সোমবার দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণ অধিকার পরিষদের নগর ও জেলা কমিটির কর্মিসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নুরুল হক নুর। এ উপলক্ষে তিনি সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে এসব বলেন।  

দেশে নতুনভাবে ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা চলছে মন্তব্য করে নুরুল হক বলেন, বর্তমানে দেশে নির্বাচিত সরকার নেই। এ ধরনের শূন্যতার সুযোগে বিভিন্ন মহল ষড়যন্ত্র এবং জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে হাসনাত, সারজিস কিংবা ছাত্রদের তৈরি জাতীয় নাগরিক পার্টির মতো সংগঠনগুলো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলছে, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার শঙ্কা আছে।  

গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা যখন সেনাবাহিনীর দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগকে নতুন করে পুনর্বাসনের কথা বলেন, তখন জনগণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়। তবে আমরা জানতে পেরেছি ছাত্রনেতারাই সেনাপ্রধানের সঙ্গে মিটিং করতে সেনা সদরে গিয়েছিলেন। সেনাপ্রধান তাঁদের ডাকেননি। আমি মনে করি, জাতীয় নাগরিক কমিটির উচিত ওই দুই ছাত্রনেতা কেন সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, সেখানে কী আলোচনা হয়েছিল—তা তদন্ত করে জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত।’  

নুরুল হক বলেন, ‘৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। ৯০-এ স্বৈরাচার এরশাদকে যেভাবে তৎকালীন সেনাপ্রধান নুরুদ্দিন খান জানিয়ে দিয়েছিলেন মি.

প্রেসিডেন্ট, আপনাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। বর্তমান সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানও কিন্তু শেখ হাসিনার আত্মীয় হয়েও তাঁকে ৪ আগস্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে। আজ সেনাবাহিনীকে টার্গেট করে এ ধরনের বক্তব্য আসাটা আমি সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্যমূলক ও অভিসন্ধিমূলক মনে করি। এই গণ-অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর বড় একটা ভূমিকা ছিল, যা ভুলে গেলে চলবে না।’

বর্তমান সময়ে দেশে ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জানিয়ে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিভাজন কমিয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঈদের আগেই জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন।

কর্মিসভায় আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের বরিশাল জেলার সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হাসান, মহানগর সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন তালুকদার প্রমুখ। নুরুল হক আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দলকে বিজয়ী করতে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র ল হক পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। 

আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল। 

এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি। 

তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।

আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।

তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ  আনেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন