দুই ছাত্রনেতা সেনাপ্রধানের সঙ্গে কেন সাক্ষাৎ করেন, তা জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত: নুরুল হক
Published: 24th, March 2025 GMT
দেশে ওয়ান-ইলেভেনের মতো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল এবং সদ্য গঠিত সংগঠনের বক্তব্য সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে। এর ফলে দেশে আবারও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আশঙ্কা বাড়ছে।
আজ সোমবার দুপুরে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গণ অধিকার পরিষদের নগর ও জেলা কমিটির কর্মিসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নুরুল হক নুর। এ উপলক্ষে তিনি সেখানে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে এসব বলেন।
দেশে নতুনভাবে ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা চলছে মন্তব্য করে নুরুল হক বলেন, বর্তমানে দেশে নির্বাচিত সরকার নেই। এ ধরনের শূন্যতার সুযোগে বিভিন্ন মহল ষড়যন্ত্র এবং জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে হাসনাত, সারজিস কিংবা ছাত্রদের তৈরি জাতীয় নাগরিক পার্টির মতো সংগঠনগুলো সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলছে, তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার শঙ্কা আছে।
গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা যখন সেনাবাহিনীর দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগকে নতুন করে পুনর্বাসনের কথা বলেন, তখন জনগণের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়। তবে আমরা জানতে পেরেছি ছাত্রনেতারাই সেনাপ্রধানের সঙ্গে মিটিং করতে সেনা সদরে গিয়েছিলেন। সেনাপ্রধান তাঁদের ডাকেননি। আমি মনে করি, জাতীয় নাগরিক কমিটির উচিত ওই দুই ছাত্রনেতা কেন সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন, সেখানে কী আলোচনা হয়েছিল—তা তদন্ত করে জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত।’
নুরুল হক বলেন, ‘৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। ৯০-এ স্বৈরাচার এরশাদকে যেভাবে তৎকালীন সেনাপ্রধান নুরুদ্দিন খান জানিয়ে দিয়েছিলেন মি.
বর্তমান সময়ে দেশে ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জানিয়ে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিভাজন কমিয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঈদের আগেই জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন।
কর্মিসভায় আরও বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের বরিশাল জেলার সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচ এম হাসান, মহানগর সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন তালুকদার প্রমুখ। নুরুল হক আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাঁর দলকে বিজয়ী করতে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
কারিগরি শিক্ষার্থীদের গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণাকে ‘সহিংস আন্দোলনের উসকানি ও গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাঁরা বলছেন, আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পরে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন আলোচনায় বসে। দাবির যৌক্তিকতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা প্রকৌশলী ও ডিপ্লোমাধারী—উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে ডাকে। সবার যুক্তিতর্ক সমানভাবে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়, যাতে কারও প্রতি কোনোরূপ বৈষম্য না হয়।
লিখিত বক্তব্যে বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আজ গাজীপুরে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। ডিপ্লোমাধারীদের পক্ষ থেকে যে প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরাই অবরোধ ডেকে সহিংস আন্দোলনের জন্য ক্রমাগত উসকানি দিয়ে যাচ্ছেন।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে কেন জনদুর্ভোগ করে অবরোধের উসকানি দেওয়া হচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
আলোচনার টেবিল ছেড়ে অবরোধ কোনো যৌক্তিক সমাধান হতে পারে না বলে উল্লেখ করা হয় লিখিত বক্তব্যে। এতে বলা হয়, এগুলো শুধুই বিশৃঙ্খলা তৈরির পাঁয়তারা ও গভীর ষড়যন্ত্র, যা প্রথাগত আন্দোলনকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আলোচনার টেবিল ছেড়ে যাঁরা অবরোধ করে দেশে নৈরাজ্য তৈরির উসকানি দিচ্ছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা খতিয়ে দেখা দরকার।
বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য গায়ের জোর খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবরোধের প্রয়োজন নেই। যৌক্তিক দাবি জানালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেবে।