খুলনায় পঞ্চবীথি ক্লাবের দখল উচ্ছেদের সময় সংঘর্ষের ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ছয় নেতার বিরুদ্ধে পাল্টা দুটি মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়ক নাঈম হাওলাদার বাদী হয়ে একটি এবং জেলা কমিটির সদস্য শেখ সাকিব আহমেদ বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় আরেকটি মামলা করেন।

এর মধ্যে নাঈম হাওলাদারের মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন নুরুল হক নূর, গণঅধিকার পরিষদের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস কে রাশেদ, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো.

জনি ও তাইজুল ইসলাম।

শেখ সাকিব আহমেদের মামলায়ও আসামি চারজন। সেখানে রাশেদ ও জনির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজ শেখ রুবেল ও হিরোন নামের দুই ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

গত ২১ মার্চ এস কে রাশেদ বাী হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খুলনা জেলা কমিটির সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন, মহররম মাহীম, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক শেখ রাফসান জানি ও কেন্দ্রীয় সদস্য রুমি রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।

স্থানীয়রা জানান, নগরীর শান্তিধাম মোড়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের সরকারি ভবনে পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র নামে একটি ক্লাব ছিল। ২৭ জানুয়ারি ভবনটি দখল করে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশিদুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে রাতেই রাশেদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কিন্তু বহিষ্কারের পরেও এস কে রাশেদ ওই ভবনে বসেই দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। সম্প্রতি সেখানে তাদের আরও কয়েকটি অঙ্গ সংগঠনের সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়।

১৮ মার্চ সন্ধ্যার পর থেকেই ভবনটির দখল উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে বার্তা ছড়ান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির খুলনার নেতাকর্মীরা। রাত ৯টার দিকে তারা ভবন উদ্ধার করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।

খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম বলেন, দুই পক্ষই পৃথক মামলা করেছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ল হক ন র কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপের চিঠি দিয়েছে বিএনপি: ভিপি নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, একসঙ্গে আন্দোলন সংগ্রাম করায় সম্প্রীতি করতে গিয়ে বিএনপি আশীর্বাদের পরিবর্তে আমাদের যে একটি অভিশাপের চিঠি দিয়েছে সে জন্যই হাসান মামুন ও তার সমর্থকরা এই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আজকে গলাচিপা দশমিনার ঘটনা থেকেই আমরা বলতে পারি সারা বাংলাদেশে কি পরিস্থিতি চলছে। এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে সেটি বিএনপির জন্য অশনি সংকেত হয়ে দেখা দিতে পারে।

শুক্রবার বিকেলে গলাচিপা উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারী কর্তৃক গলাচিপা, দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গণঅধিকার পরিষদের অফিস ভাংচুর, নেতা-কর্মীদের উপর হামলা ও দোকান-বাড়ি ভাংচুরসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। 

নুরুল হক নুর বলেন, ‘‘পটুয়াখালীর দশমিনা গলাচিপায় আমাদের নেতাকর্মীর উপরে হামলা হয়েছে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। মিছিলে বিএনপির হাসান মামুনের সমর্থকরা হামলার প্রস্তুতি নেওয়ায় তাদের নিবৃত্ত করতে না পেরে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এটি প্রশাসনের ব্যর্থতা। এই অক্ষমতা প্রশাসন কাটিয়ে উঠতে না পারলে আগামীতে এদের দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’’

ভিপি নুর আরও বলেন, ‘‘হাসান মামুনের অনুসারীরা অভিযোগ করছেন বিএনপির অফিস নাকি ভাংচুর করা হয়েছে। বিএনপি এত বড় একটি দল কার সাহস আছে তাদের অফিস ভাংচুর করার? এই হাসান মামুনের মত বিতর্কিতদের জন্য দলের নেতাকর্মীরা আজ উশৃঙ্খল হচ্ছে। আমরা হামলার শিকার হয়েছি। আমার নেতাকর্মীরা আহত হয়েছে। আমার কর্মীদের মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে। আবার শুনেছি আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।’’ 

‘‘২৪-এর শতশত তাজা প্রাণের বিনিময়ে এই গণঅভ্যুত্থানের পরে সুবিধা নিচ্ছে হাসান মামুনের মতো নেতাদের পরিবার। আমি বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি, তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, এখন দেখার পালা! গণঅধিকার পরিষদ ভেসে আসেনি, অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এই দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ফ্যাসিষ্ট সরকার হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছি। প্রয়োজনে আবারো আমজনতাকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিস্টের  বিরুদ্ধে লড়াই করে একটি রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো।’’

সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের জেলা, উপজেলা ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গতকাল রাতে পাতাবুনিয়া গ্রামে ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং তার গ্রামে গনঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায়  চরম উত্তেজনা বিরাজ করায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

মো. ইমরান//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
  • গলাচিপা ও দশমিনায় ১৪৪ ধারার আদেশ অব্যাহত
  • পটুয়াখালীতে বিএনপি-জিওপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি
  • আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপের চিঠি দিয়েছে বিএনপি: ভিপি নুর