বাংলাদেশে আইসিটি পরিষেবায় নিয়োজিত ইন্ডাস্ট্রি নেতা ও সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীতে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের উদ্যোগ নেয় তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সরকারি তালিকাভুক্ত পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।

আইসিটি নিয়ে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও ব্যবসায়ী নেতা, জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও শুভানুধ্যায়ীরা এতে অংশ নেন। আইসিটি নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয় বিআইজেএফ ইফতার মাহফিল। দোয়ায় সংগঠনের প্রয়াত সদস্য ও সদস্যের প্রয়াত আত্মীয়স্বজনের রুহের মাগফেরাত ও দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রত্যাশায় মাহফিলে উপস্থিত সবাই দোয়ায় শরিক হন। ইফতার শেষে তথ্য ও টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির সময়োপযোগী বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন অতিথিরা।

আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির ব্র্যান্ডিং প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, আইসিটি পরিষেবা খাতে আমাদের অবস্থান এখন আগের তুলনায় সুদৃঢ়। এখন উচিৎ এ খাতের সফলতা সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সঠিক তথ্যসহ উপস্থাপন করা। সেক্ষেত্রে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ওপর সংশ্লিষ্ট সবার আস্থা ফিরবে। ফলে সার্বিকভাবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মানোন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

তরুণ উদ্যোক্তার প্রতি যত্নশীল না হওয়ায় আমরা তাদের মেধার সুফল নিতে পারছি না। তারা নিয়মিত দেশ ত্যাগ করছেন। নিরাশ উদোক্তার প্রতি যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের তাদের অংশীজন করতে হবে। এসব কথা বলেন বেসিস সাবেক সভাপতি ও ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের বিআইজেএফ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস এম ইকবাল।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) মহাসচিব ফয়সাল আলিম বিগত ১৬ বছরের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের সব ধরনের দুর্নীতি খবর সাংবাদিকদের তুলে ধরতে আহবান জানান। তিনি দেশের ক্রান্তিলগ্নে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে গুছিয়ে আনতে তাদের সঙ্গে প্রযুক্তিপ্রেমী ও সাংবাদিকদের ভূমিকার উল্লেখ করেন। বিগত সরকারের গৃহিত প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে জানান।

বাক্কোর যুগ্ম মহাসচিব মুসনাদ ই আহমেদ বলেন, সবাই মিলে ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে ইনক্লুসিভ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সামনের বাংলাদেশে ব্র্যান্ডিং হয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়া সময়ের দাবি।

অতিথির মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম, মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক, বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস গাজী তৌহিদ আহমেদ, আইসিসি কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, ডিএক্স গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান কানন, পরিচালক লিটন বিশ্বাস, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) পরিচালক সায়মা শওকত, এডিএন টেলিকম লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ, রেড ডেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মইন উদ্দিন আহেমেদ, সেলেক্সট্রা লিমিটেডের উপ-মহা ব্যবস্থাপক নাহিয়ান মাহমুদ, সহজ লিমিটেডের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা কর্নেল (অব.

) আমিনুল হক, গো বাংলা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা জামান, উল্কাসেমির ব্যবস্থাপক মো. মুজাম্মেল হোসেইন, এরিনাফোন বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রাব্বি, গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি, রিভ গ্রুপের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রায়হান হোসেন, মোবাইল ফোন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনিরুর বাসার, অপো বাংলাদেশের ব্র্যান্ড প্রমোশন ম্যানেজার নাজমুস সাকিব, রিয়েলমি ব্র্যান্ডের পাবলিক রিলেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহেদ মোরশেদ জায়গীরদার, ইউমিডিজি ব্রান্ডের সেলস অ্যান্ড অপারেশন হেড মাসুকুর রহমান প্রমুখ।

ইফতার মাহফিল পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন নির্বাহী সদস্য নাজনীন নাহার। সার্বিক দায়িত্বে অংশ নেন সভাপতি হিটলার এ. হালিম, সহ-সভাপতি ভূঁইয়া ইনাম লেনিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তুষার, কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্ত, প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও নির্বাহী সদস্য এনামুল করিম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইন ড স ট র র কর মকর ত ব যবস থ ইফত র আইস ট সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ