ঈদুল ফিতরের ছুটির পরই তোমাদের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা শুরু হবে ১০ এপ্রিল। বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই পরীক্ষা। তোমাদের জীবনের প্রথম পরীক্ষা। তোমাদের পড়াশোনার প্রস্তুতিই কিন্তু এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। এখন শুধু রিভিশন দেওয়ার পালা, ঝালাই করে ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার পালা। ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হয়েছে। তোমাদের অনেকেই ঈদ করতে বাড়ি যাবে। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তোমরা অনেকেই মনের আনন্দ মিশিয়ে ঈদ করতে পারবে না। ঈদে কী করবে কী করবে না, তা জেনে নাও।

*গুছিয়ে রেখে যাও

ঈদের আগেই এসএসসি পরীক্ষার দরকারি জিনিসপত্র তোমাকে গুছিয়ে রেখে যেতে হবে। যেমন এসএসসির প্রবেশপত্র (এরই মধ্যে স্কুল থেকে সংগ্রহ করেছ), কলম কয়েকটা, পেনসিল, রাবার, পেনসিল কাটার, রাইটিং বোর্ড, স্কেল ইত্যাদি। হাতের কাছে রাখলে পরীক্ষার আগে কোনো রকম হুড়োহুড়ি করে কিনতে হবে না। মানে টেনশন ফ্রি।

*রিভিশন দেবে যে বিষয়

ঈদের ছুটির পরপর কিন্তু তোমার বাংলা প্রথম পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, গণিত পরীক্ষা হবে। তাই এ কয়েকটা বিষয় ভালো করে রিভিশন দেওয়ার জন্য অবশ্যই বইগুলো হাতের কাছে রাখবে, যাতে করে একটু সুযোগ পেলে কোনো রিভিশন দিতে সহজ হয়। গণিত বিষয়টি সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিদিন ২–৩//////////////////// হলেও অবশ্যই অনুশীলন করা প্রয়োজন। এতে তোমার প্রস্তুতির মাত্রা আরও বেড়ে যাবে।

আরও পড়ুনইংরেজি ১ম পত্রে বেশি নম্বর কীভাবে পাবে ২৬ মার্চ ২০২৫

*নোট করে রাখো

ঈদের ছুটিতে নিজের বাসায় বা বাড়িতে রিভিশন দেওয়া সময় বইয়ের অনেক দরকারি তথ্য মনে পড়তে পারে বা পরে দরকারে লাগতে পারে। তাই একটা নোট খাতা তৈরি করে নেবে। যার মধ্যে তথ্য পরে দেখতে পারো বা প্রয়োজনীয় সমাধান করে নিতে পার।

*শরীরের প্রতি যত্ন

ঈদে অনেকেই বাড়ি যাবে বা আনন্দ করবে বন্ধু বা আত্মীয়দের সঙ্গে। তবে নিজের শরীরের প্রতি অবশ্যই যত্ন নেবে। কারণ, গরমের কারণে তোমার শরীরে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই রোদে যাবে না। শরীর অসুস্থ হওয়া থেকে যথাসম্ভব সাবধান থাকবে।

আরও পড়ুনএসএসসি-২০২৫ : বাংলা ১ম পত্রে ভালো নম্বর পাওয়ার কৌশল২৩ মার্চ ২০২৫

*আত্মবিশ্বাস রাখবে মনে

মনে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস রাখবে তোমার পরীক্ষা অবশ্যই ভালো হবে। কারণ, তুমি সারা বছর ভালো করে পড়েছ, প্রস্তুতি নিয়েছ। আর ঠিক এ কারণেই তোমার পরীক্ষা ভালো হবে আশা করি। কোনো কিছু নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবে না।

*অভিভাবকদের প্রতি

পরীক্ষার আগের কয়েকটা দিন বিশেষ করে ঈদের সময় আপনার সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখবেন। যেমন সময়মতো পড়তে বসছে কি না, কতটা সময় মুঠোফোন দেখছে, পরিমিত ঘুম আসছে, ঠিক সময়মতো খাবার খাচ্ছে কি না ইত্যাদি। এ ঈদের সময় বেশি ঠান্ডাজাতীয় খাবার সন্তানকে খেতে দেবেন না। গরম-ঠান্ডাজনিত কারণে খাওয়ার অনিয়ম হলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাই আগে থেকেই একটু সাবধান থাকতে হবে।

*লেখক: খন্দকার আতিক, সিনিয়র শিক্ষক, উইলস লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুনইউনিভার্সিটি অব লুক্সেমবার্গের বৃত্তি, স্নাতক–স্নাতকোত্তরে প্রয়োজন নেই আইইএলটিএস২৫ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ত পর ক ষ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন

মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।

‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা

শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।

শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫

ঐতিহাসিক পটভূমি

মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা

মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।

আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’

সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট

আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সচিবালয়ে আবারও বিক্ষোভ কর্মচারীদের
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স, সিজিপিএ ২.৫ হলেই আবেদন
  • এসএসসিতে অনুপস্থিতির বড় কারণ বাল্যবিবাহ
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৬ জুন ২০২৫)
  • ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সেরা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৫ জুন ২০২৫)
  • অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আরও যাঁরা পেয়েছেন ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০২৫’
  • সৌদি আরবের ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, আবেদনের শেষ তারিখ আজ 
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৪ জুন ২০২৫)
  • মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন