মেসির হয়ে কেন বক্সিংয়ে লড়তে চান তাঁর বডিগার্ড
Published: 28th, March 2025 GMT
রিংয়ে লড়াইটা তাহলে হচ্ছেই? অন্তত পরিস্থিতি সেটাই বলছে। একটি শর্তে লিওনেল মেসির বডিগার্ড ইয়াসিন চুকোর সঙ্গে লড়তে রাজি হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের লোগান পল। শর্তটি হলো, চুকোকে হারের পর পলের পানীয় ‘প্রাইম’ পান করতে হবে।
আসলে ঝামেলার শুরুও এই পানীয় নিয়েই। ব্যবসায়িক অংশীদার কেএসআইয়ের সঙ্গে ২০২২ সালে ‘প্রাইম’ নামে একটি পানীয় বাজারজাত শুরু করেন লোগান। এরপর মেসিও ‘মাস+’ নামে একটি পানীয়ের ব্র্যান্ড গত বছর জুন থেকে বাজারজাত শুরু করেন। কিন্তু পানীয় দুটির প্যাকেজিং ও ডিজাইন প্রায় একই রকম হওয়ায় আলোচনার সূত্রপাত ঘটে। লোকে অভিযোগ করেন, পানীয় দুটি কিনতে গিয়ে তাঁরা বিভ্রান্তিতে পড়ছেন।
আরও পড়ুনরোনালদোর ছেলের জন্য পাঁচ দেশের দরজা খোলা ১ ঘণ্টা আগেগত অক্টোবরে নিউইয়র্কে প্রাইমের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন মেসির আইনজীবীরা। প্রাইমকে ‘অ্যান্টিকম্পিটিটিভ’-এর দোষে অভিযুক্ত করা হয় মেসির ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে। প্রাইমকে নোংরা বিপণন-পরিকল্পনার দায়ে অভিযুক্ত করেন মেসির কৌঁসুলিরা। এক মাস পর লোগানের আইনজীবীরা মেসির ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে অনুকরণের অভিযোগ তুলে পাল্টা মামলা করেন।
লোগান এরপর গত মাসে টিকটকে পোস্ট করা ভিডিওতে বলেন, বক্সিংয়ের রিংয়ে লিওনেল মেসি তাঁর সঙ্গে লড়াই করলে আদালত থেকে মামলা তুলে নেবেন। তাঁর সেই চ্যালেঞ্জের জবাবও দেন মেসির বডিগার্ড চুকো। কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, অনুশীলন সেশনে একজনের প্রশ্নের উত্তরে লোগানকে নিয়ে চুকো বলছেন, ‘লোকটি কে, লিও তা জানে না। সে যদি সত্যিই লড়াই করতে চায়, তবে আমার সঙ্গে লড়তে পারে।’ কমব্যাট স্পোর্টসের এক্স হ্যান্ডল ‘হ্যাপি পাঞ্চ’-এ ভিডিওটি পোস্ট করা হয়।
চুকোর এই চ্যালেঞ্জের পর লোগান আর কোনো জবাব দেননি। কিন্তু চুকো এটুকুতেই থামেননি। দুই দিন আগে নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে লোগানের জন্য একটি ভিডিও পোস্ট করেন চুকো। সেই ভিডিওতে চুকো বলেন, ‘শোনো লোগান, এই ভিডিও করেছি কারণ, রাস্তায় ও ইনস্টাগ্রামে অনেকের অনেক বার্তা ও মন্তব্য পেয়েছি এই লড়াই নিয়ে। আসো মানুষের জন্য এই লড়াই করি। চলো এটা করি।’ লোগান এ ভিডিওতেই মন্তব্য করেন, ‘আমার ভাই অন্য কিছু ভেবেছিল।’ মেসির বডিগার্ড উত্তর দেন, ‘কেন? ভয় পাচ্ছ? বড় বড় কথা বলে পিছু হটছ?’
আরও পড়ুন‘অসম্মানের ম্যাচ’ জিতে রিয়ালকে আরও পেছনে ফেলল বার্সা১ ঘণ্টা আগেঘটনা এখানেই থামেনি। ইউটিউবে গত বুধবার রাতে পোস্ট করা নিজের সাপ্তাহিক ভিডিও ব্লগে লোগান এর উত্তর দিয়েছেন। ভিডিওতে লোগানকে বক্সিং অনুশীলন করতে দেখা যায়। তখন কেউ একজন তাঁকে মেসির বডিগার্ডের চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জানান। লোগান এরপর একটি শর্তে চুকোর সঙ্গে লড়াইয়ে রাজি হয়ে বলেছেন, ‘তাকে (চুকো) আচরণ ঠিক করতে বলো। এমএমএতে খেলা কেউ ভাবছে, সে বক্সিং করতে পারে। সে ভাবছে, মেসির বডিগার্ড বলেই সে জিততে পারে এবং লোকজনের মনোযোগ কাড়তে পারে।’
লোগান এরপর বলেন, ‘আমি এখন পুয়ের্তো রিকোয় আছি। পুয়ের্তো রিকোয় আমাকে থামাতে চাইলে তোমাকে স্বাগতম। কিন্তু যখন আমি তোমাকে হারাব, তারপর তোমাকে প্রাইম পান করতে হবে।’ লোগান যোগ করেন, ‘মেসির জন্য আমার সত্যিই খারাপ লাগছে। কারণ, সে মামলায় হেরে যাবে। হয়তো বডিগার্ডকেও হারাবে। কারণ, একজন ইউটিউবারের কাছে হেরে গেলে তাকে রাখার কী দরকার। বিশ্বকাপ বাদে সে সবকিছুই হারাচ্ছে।’
মেসি ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর চুকোকে বডিগার্ড হিসেবে নিয়োগ দেন। ৩৫ বছর বয়সী ইয়াসিন চুকো আমেরিকান। আমেরিকান বাবা ও ফরাসি মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া চুকোর উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম লা নাসিওন এর আগে জানিয়েছিল, সাবেক মিক্সড মার্শাল আর্টিস্ট ইয়াসিন যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর সাবেক নেভি সিল—আফগানিস্তান ও ইরাকে কাজ করেছেন। যদিও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেইল অনলাইন জানিয়েছে, নেভি সিলে বর্তমান সদস্যদের কেউ তাঁর নাম শোনেননি এবং নেভি সিল ডেটাবেজেও ইয়াসিনের নাম নেই। সে যা–ই হোক, তায়কোয়ান্দো ও বক্সিংয়ে বিশেষভাবে দক্ষ ইয়াসিন। মাঠ ও মাঠের বাইরে মেসি ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইয়াসিনের ৫০ জনের একটি দল আছে। দিন–রাত মিলিয়ে ইয়াসিনকে ২৪ ঘণ্টাই মেসি ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হয়।
লোগান পল রেসলার হিসেবে ২০২২ সালে ডব্লিউডব্লিউইয়ের সঙ্গে চুক্তি করেন। খণ্ডকালীন রেসলার হিসেবে তাঁকে সেখানে দেখা যায়। ২০২১ সালে ফ্লোরিডায় সাবেক বক্সার ফ্লয়েড মেওয়েদারের সঙ্গে প্রদর্শনী লড়াইয়েও অংশ নেন লোগান। পেশাদার বক্সার ও ইনফ্লুয়েন্সার জ্যাক পল তাঁর ভাই।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম ওরফে রিয়াদ। আজ বুধবার সন্ধ্যায় শহরের বকচর এলাকার কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সমিতির নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ মোহাম্মদ রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে জড়ো হন। এ সময় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফুলকে অপসারণে সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। আজ পদত্যাগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান নেন তাঁরা। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কার্যালয়ের ভেতর থেকে ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি সেখানে হামলার চেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা তা প্রতিহত করেন এবং একজনকে চাকুসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে যান। এরপর নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে আরিফুল ইসলাম পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে সভাপতির কাছে জমা দেন। পরে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল বের করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের মুখপাত্র ফাহিম আল-ফাত্তাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর একজন দোসর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের চেয়ারে থাকতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগের কর্মসূচি নেয়। আমরা শুনেছি রিয়াদ পদত্যাগ করেছে।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘রিয়াদকে পদত্যাগ করানো আমাদের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। স্বৈরাচারী দোসররা ৫ আগস্টের পর কোনো দপ্তরের চেয়ারে থাকবে না, সেটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল।’
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্ররা গিয়ে মব সৃষ্টি করে সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় এক যুবক চাকু নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। তখন ছাত্ররা তাঁকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। এরপর সেই যুবককে অস্ত্র আইনের মামলায় বিকেলে আদালতে পাঠালে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।