যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার পুরোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল, বললেন মার্ক কার্নি
Published: 28th, March 2025 GMT
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাঁর দেশের যে পুরোনো সম্পর্ক ছিল, তা শেষ হয়ে গেছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অটোয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কার্নি এ কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার বিদেশে তৈরি গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে কানাডীয়দের নিজেদের অর্থনীতি নিয়ে মৌলিকভাবে ভাবা উচিত বলে মনে করেন মার্ক কার্নি। তিনি আরও বলেন, কানাডা প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর এর সর্বোচ্চ প্রভাব পড়বে।
বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, আমদানি করা যানবাহন ও যানবাহনের সরঞ্জামের ওপর তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। তিনি এটাকে ‘স্থায়ী’ বলে উল্লেখ করেন।
১৯৬৫ সালে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। লিবারেল পার্টির নেতা কার্নি ওই চুক্তিকে তাঁর দেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সে চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে ফরাসি ভাষায় কার্নি বলেন, ‘শুল্ক আরোপের মধ্য দিয়ে এটা শেষ হলো।’
কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, মার্কিন শুল্ক আরোপের পরও কানাডা অটোশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারে, যদি সরকার ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এ শিল্পকে নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করে এবং এ শিল্পকে নতুনভাবে গড়ে তোলে।
কার্নি বলেন, কানাডাকে এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা কানাডীয়রাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে অন্য সহযোগীদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
কানাডীয়রা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক রাখতে পারে কি না, তা এখনো দেখা বাকি বলে উল্লেখ করেন কার্নি।
আরও পড়ুনবিদেশে তৈরি গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের২১ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্র আগেই কানাডীয় পণ্যের ওপর আংশিকভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। সেই সঙ্গে সব ধরনের অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাত আমদানির ওপরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।
হোয়াইট হাউস বলেছে, গাড়ির ওপর নতুন যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। ব্যবসার জন্য গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ কার্যকর হবে ৩ এপ্রিল থেকে। আর গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বসতে পারে মে কিংবা আরও পরে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ শ ল ক আর প শ ল ক আর প ক শ ল ক আর প র আমদ ন র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টার
দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা যখন নতুন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে, ঠিক সেই সময় দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর প্রতি আস্থা পুনর্গঠন, আঞ্চলিক সংযোগ জোরদার এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি এ আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন বিল্ডিং’ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি: পরিবেশ উপদেষ্টা
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পরিবেশ উপদেষ্টার নির্দেশ
পরিবেশ উপদেষ্টা মঙ্গলবার পাকিস্তানের ইসলামাবাদে এসডিপিআই’র বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন দি ইমারজিং ওয়ার্ল্ড ডিজঅর্ডার’-এ অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বায়ুদূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, পানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু বিপর্যয়ের মতো যৌথ সংকট মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়াকে এখনই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
নদী শাসন, ন্যায্য পানি বণ্টন এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আঞ্চলিক সহায়তা জোরদারের ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় ইতোমধ্যে ঘন-ঘন বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহসহ আকস্মিক দুর্যোগের পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাটির উর্বরতা হ্রাস ও কৃষি উৎপাদন কমে যাওয়ার মতো ধীর গতির জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখোমুখি।”
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশেন একাই তার জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের ঘাটতি স্পষ্ট করে। যদি অর্থ না-ও আসে, আমরা অপেক্ষা করে থাকব না।”
সম্মেলনের বিষয়বস্তুকে ‘সময়সাপেক্ষ ও গভীরতাসম্পন্ন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “শাসন ব্যবস্থার নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক কাঠামো আজ সংকটে, বহুপাক্ষিকতা দুর্বল হচ্ছে, বৈষম্য, ভূ-রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যবস্থাকে নতুনভাবে গঠন করছে।”
তিনি বলেন, “শ্রীলঙ্কা থেকে নেপাল পর্যন্ত জনগণের বিক্ষোভ প্রমাণ করে বর্তমান শাসন মডেল জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ। তারা যুক্ত, সচেতন এবং প্রভাবিত হওয়ার মতো নয়—তাদের হাতেই তৈরি হচ্ছে নতুন বিশ্বব্যবস্থা।”
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী প্রফেসর আহসান ইকবাল, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, জাপানের আইজিইএস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর কাজুহিকো তাকেওচি, পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, এসডিপিআই চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসাডর শফকত কাকাখেল, এসডিপিআই নির্বাহী পরিচালক ড. আবিদ কাইয়ুম সুলেরি এবং এআইওইউ-এর ড. ইরশাদ আহমদ আরশাদ।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ