ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। বাবা-মা, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন বাড়তি আনন্দের। ঈদের হাওয়া লেগেছে শোবিজ অঙ্গনেও। সঙ্গত কারণে শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও ঈদ-আনন্দে ভাসছেন। পরিবার-পরিজন রেখে কেউ কেউ রয়েছেন দূর পরবাসে। এই তালিকায় রয়েছেন এ সময়ের আলোচিত চিত্রনায়ক জায়েদ খান। দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন তিনি। 

ঈদুল ফিতর সেখানেই উদযাপন করছেন জায়েদ খান। সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এ তথ্য উল্লেখ করে জায়েদ খান রাইজিংবিডিকে বলেন, “সকালেই ঈদের নামাজ সেরেছি। এখানে আমার কাজিন সংগীতশিল্পী প্রতীক হাসান রয়েছে। আমরা একসঙ্গে ঈদ উদযাপন করছি। এরপর এখানে অবস্থানকারী শিল্পীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছি।”

গায়ক প্রতীক হাসানও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ঈদের নামাজ শেষে ফ্রেমবন্দি হন জায়েদ খান-প্রতীক হাসানসহ অন্যরা

আরো পড়ুন:

ফ্লোরিডায় বাংলা সিনেমার গানে মঞ্চ মাতালেন জায়েদ খান

দুই নায়িকাকে নিয়ে জায়েদ খানের ডিগবাজি (ভিডিও)

কয়ক বছর আগে জায়েদ খানের বাবা-মা গত হয়েছে। সাধারণত, ঈদের দিনে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে থাকেন। কিন্তু এবার তা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জায়েদ খান বলেন, “ঈদের দিন সকালেই বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করে থাকি। এবার আর হলো না। মনটা ভীষণ খারাপ। ভাই-বোনকে মিস করছি। বোনের হাতের রান্না মিস করছি। সত্যি বলতে দেশের মানুষকে খুব মিস করছি। দূরপরবাসে পড়ে থাকলেও মনটা দেশে পড়ে আছে। পরিচিত মানুষের মুখগুলো দেখতে ইচ্ছে করছে; সবার জন্য দোয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা রইল।” 

জায়েদ খান যুক্তরাষ্ট্রে ঠিকানা টেলিভিশনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। সেখানে একটি শো উপস্থাপনা করছেন। ঈদের দিনে সহকর্মীদের সঙ্গেও সময় কাটাবেন। জায়েদ খান বলেন, “ঠিকানা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। পরিবারের কিছু কার্যক্রম ছিল, সেগুলো করেছি।” 

নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদপত্র ‘ঠিকানা’। এর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে বিনোদনমূলক একটি টক শো উপস্থাপনা করছেন, যেখানে শোবিজ ও চলচ্চিত্রের তারকারা উপস্থিত থাকেন। প্রথমবারের মতো উপস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন এই নায়ক।   

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক থেকে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত শোয়েও পারফর্ম করছেন জায়েদ খান।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন করছ করছ ন উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কে পাকা কলার বাজার, ক্রেতারা সবাই পর্যটক

কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দিয়ে টেকনাফের দিকে যাতায়াতের সময় রাস্তার পাশে দেখা যায় রাশি রাশি কলার ছড়ি। গাড়ি থামিয়ে বাজার থেকে কলা কেনেন পর্যটকেরা। উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের রূপপতী গ্রামের টেকব্রিজ এলাকায় সকাল ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে পাকা কলা বেচাবিক্রি।

গত রোববার সকালে কলার বাজারে নেমে দেখা গেল, বাঁশের সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ৪০-৪৫টি পাকা কলার ছড়া। প্রতিটি ছড়াতে ৫০ থেকে ১২০টি কলা আছে। প্রতিটি কলা বিক্রি হচ্ছে পাঁচ টাকায়। পাহাড়ে চাকমা সম্প্রদায়ের চাষিদের কলার বাগান রয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী সেখান থেকে গাছে পাকা ফলমূল কিনে মেরিন ড্রাইভের বাজারে বিক্রি করেন। পর্যটকেরা পাকা কলা কিনে বাজারেই খেয়ে নেন, কেউ কেউ কলার ছড়া কিনে নিয়ে রওনা হন গন্তব্যে।

ঢাকার ধানমন্ডির ঠিকাদার সালাহ উদ্দিন (৪৮) বাজার থেকে ২১৫ টাকায় কিনেছেন একটি কলার ছড়া। ছড়াতে কলা আছে ৪৩টি। সালাহ উদ্দিন বলেন, ঢাকা শহরে বাংলা কলা খুব একটা পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও প্রতিটির দাম ১০-১২ টাকা। কক্সবাজার শহরেও প্রতিটি বাংলা কলার দাম ১২ টাকা। অথচ এখানে পাঁচ টাকা। তা–ও গাছ পাকা। সড়কের অন্য কোথাও পাকা কলা বিক্রির এ রকম বাজার চোখে পড়ে না।

দেখা গেছে, পাহাড় থেকে লোকজন পাকা কলার ছড়া কাঁধে নিয়ে বাজারের দিকে আসছেন। বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিন গড়ে ২০০ ছড়া কলা বিক্রি হয় এ বাজারে। চাহিদা অনুযায়ী গাছ থেকে ছড়া কাটা হয়। পর্যটকের সমাগম বাড়লে কলা বিক্রিও বেড়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন জানান, সাত বছর আগে রূপপতী গ্রামের কৃষক আবুল হোসেনের বাড়িতে একসঙ্গে চারটি গাছের বাংলা কলা পেকে যায়। এত কলা খাওয়ার লোক ঘরে নেই। উপায় না দেখে তিনটি কলার ছড়া বাড়ির পাশের মেরিন ড্রাইভের টেকব্রিজে নিয়ে আসেন। কলাগুলো সড়কের পাশে রেখে দাঁড়িয়ে থাকেন আবুল হোসেন। পর্যটকেরা পাকা কলা দেখে গাড়ি থামান। দুই ঘণ্টায় সব কলা বিক্রি হয়ে যায়। এর পর থেকে আবুল হোসেন গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে পাকা কলা কিনে মেরিন ড্রাইভ সড়কে এনে বেচাবিক্রি শুরু করেন। তিন মাসের মাথায় বাজারে কলা বিক্রি শুরু করেন আরেক কৃষক আবদুল নবী। এখন বাজারে কলা ব্যবসায়ীর সংখ্যা ১৪।

বাজারে কথা হয় মো. সেলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেরিন ড্রাইভের কয়েকটি স্থানে ডাব বিক্রি হয়। কিন্তু বাংলা কলা কোথাও বিক্রি হয় না। বাংলা কলা সব জায়গাতে পাওয়াও যায় না। রূপপতী, চেইনছড়ির পাহাড়ে চাকমাদের বসতি। সেখানে তাঁরা বাংলা কলার চাষ করেন। কলার বাজারটি চালুর পর গ্রামের পরিচিতিও দ্রুত বাড়তে থাকে। দিন দিন কলার চাহিদাও বাড়ছে।

রূপপতী গ্রামের স্কুলছাত্রী সেনুয়ারা বেগম বাজারে নিয়ে এসেছে তিনটি কলার ছড়া। সঙ্গে কিছু থোড়, ঢেঁকিশাক ও অন্য ফলমূল। সে বলে, তার বাবা দিন মজুর। সেনুয়ারা সোনারপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের স্কুলে যাতায়াতে খরচ লাগে ৬০ টাকা। এ টাকা বাবার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। লেখাপড়া যেন মাঝপথে বন্ধ হয়ে না যায়, সে জন্য কলার ব্যবসায় নেমেছে সে। যা আয় হয়, তা দিয়ে লেখাপড়া খরচ চলে যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ