গ্রিনল্যান্ড গত কয়েক মাসে বিশ্বরাজনীতিতে বেশ আলোচিত একটি দেশ। এ বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করতে আগ্রহ দেখান। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য গ্রিনল্যান্ড জয় করতে চান। গ্রিনল্যান্ড বলতে গেলে পুরোটাই বরফের চাদরে গঠিত। ডেনমার্কের মালিকানাধীন এই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের বেশির ভাগ অংশ বরফে তৈরি। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রিনল্যান্ডের অনেক অংশ হারিয়ে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দ্রুত গলে যাচ্ছে বরফ। আবার অনেক এলাকায় বরফে ফাটল দেখা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের বিজ্ঞানী টুইলা মুন বলেন, বিষয়টা অনেকটা এ রকম, আপনি এক লিটার পানি সমুদ্রে ঢালছেন, সেই পানি দ্রুত ঢেউয়ের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর সব মানুষ, প্রায় বিলিয়ন মানুষ ২২ বছর ধরে প্রতিদিন ১৫ মিনিট অন্তর সমুদ্রে এক লিটার করে পানি ফেললে সমুদ্রে অনেক পরিবর্তন হবে। এমন পানির প্রবাহ সমুদ্রের লবণের পরিমাণ পরিবর্তন করবে। সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে যাবে। গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর সংকুচিত হওয়ার কারণে এমনটাই হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের প্রায় তিন গুণ আকারের চেয়ে বড় ৬ লাখ ৫৬ হাজার মাইল এলাকার বরফের চাদর নিয়ে গ্রিনল্যান্ড গঠিত। প্রায় ৬ লাখ ৯৬ হাজার ঘন মাইল বরফ ধারণ করছে গ্রিনল্যান্ড। অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলের বরফের চাদরের মতো গ্রিনল্যান্ড সূর্যের তীব্র আলো প্রতিফলিত করে আমাদের গ্রহকে শীতল করছে। বড় একটি মিঠাপানির উৎস হিসেবে কাজ করছে গ্রিনল্যান্ড। সমুদ্রে যত বেশি মিঠাপানি ফেলা হবে তত সমুদ্রের ঘনত্ব, তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার সূক্ষ্ম ভারসাম্যে পরিবর্তন আসবে। বরফ গলে পানি সমুদ্রে যুক্ত হওয়ার কারণে সমুদ্রের স্রোত ধীর হয়ে যাচ্ছে। সমুদ্রের স্তর প্রায় ২৩ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে বর্তমানে যে হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হচ্ছে, সেই মাত্রা বজায় থাকলে ৩০০০ সালের মধ্যে পুরো গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর গলে যেতে পারে বলে গবেষকেরা মনে করেন।  

এখন বরফের অনেক অংশ গলে যাওয়ার সাথে সাথে শিপিং ও খনিজ পদার্থ উন্মোচিত হচ্ছে। গ্রিনল্যান্ড বিরল খনিজের উৎস হতে পারে বলে ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডের অধিকার চান। গ্রিনল্যান্ডের বিভিন্ন খনিজের সঙ্গে দস্তা, সিসা ও সোনা রয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিস অনুমান করেছে, সেই অঞ্চলে এক ট্রিলিয়ন ডলারের মতো খনিজ পদার্থ রয়েছে। এই খনিজের জন্য গ্রিনল্যান্ড নিয়ে সবার আগ্রহ।

সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গুগলের সার্কেল টু সার্চে আসছে নতুন দুই সুবিধা

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনে দ্রুত নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে দিতে গত বছর ‘সার্কেল টু সার্চ’-সুবিধা চালু করে গুগল। এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে ফোনে ভিডিও দেখার সময় বিভিন্ন দৃশ্যে থাকা পণ্যের ছবি নির্বাচন করে সে বিষয়ে সরাসরি গুগলে সার্চের ফলাফল জানা যায়। অর্থাৎ ভিডিওতে থাকা যেকোনো ব্যক্তির চশমা সার্কেল করলে নিচে চশমাটি-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য গুগল সার্চের মাধ্যমে দেখার সুযোগ মিলে থাকে। ব্যবহারকারীদের দ্রুত বিভিন্ন তথ্য জানার সুযোগ দিতে সার্কেল টু সার্চে নতুন দুই সুবিধা যুক্ত করতে যাচ্ছে গুগল।

জানা গেছে, গুগল অ্যাপের সর্বশেষ বেটা সংস্করণ বিশ্লেষণ করে সার্কেল টু সার্চে নতুন দুই সুবিধা যুক্তের বিষয়টি শনাক্ত করা হয়েছে। গানের তালিকা সংরক্ষণ এবং অনুবাদপ্রক্রিয়া আরও সহজ করতে সক্ষম সুবিধাগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করছে।

সার্কেল টু সার্চ ব্যবহার করে গান শনাক্তের সময় পর্দায় বর্তমানে একটি ছোট মিউজিক আইকন দেখা যায়। কিন্তু নতুন সুবিধাগুলো চালু হলে মিউজিক আইকনে যুক্ত হবে একটি অতিরিক্ত বাটন, যা দেখতে অনেকটা ঘড়ির মতো। এই নতুন আইকনের মাধ্যমে সরাসরি প্রবেশ করা যাবে ‘রিসেন্ট সং সার্চ’ নামের একটি মেনুতে। ফলে ব্যবহারকারী সহজেই আগে শনাক্ত করা গানের তালিকা দেখতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, এখানে গানের শিরোনাম, শিল্পীর নাম এবং অ্যালবামের ছবিও দেখা যাবে।

সার্কেল টু সার্চের আরেকটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে অনুবাদ সুবিধায়। বর্তমানে কোনো লেখাকে চিহ্নিত করার পর তা অনুবাদ করতে চাইলে ব্যবহারকারীকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করতে হয়। নতুন সুবিধা চালু হলে সার্কেল টু সার্চে কোনো লেখা ট্যাপ করলেই সঙ্গে সঙ্গে অনুবাদের বাটন পর্দায় দেখা যাবে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

সম্পর্কিত নিবন্ধ