শাকিবের ‘বরবাদ’ দেখে কী বলছেন দর্শকরা?
Published: 1st, April 2025 GMT
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগেই আলোচনার টেবিলে ঝড় তুলে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। সেন্সর বোর্ডের সার্টিফিকেট নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। পরিচালক কাজী হায়াতের সঙ্গে শাকিবভক্তদের বিরূপ আচরণ! সব মিলিয়ে আবহাওয়া বেশ গরম ছিল।
তবে সমস্ত জটিলতা পাশ কাটিয়ে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সারাদেশে মুক্তি পেয়েছে ‘বরবাদ’ সিনেমা। মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত এ সিনেমা মুক্তির পর থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন বিভিন্ন বয়সের দর্শকরা। কেবল তাই নয়, ভূয়সী প্রশংসা করছেন তারা।
বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘বরবাদ’। ঈদের দিন প্রথম শো হাউজফুল ছিল। আজও তাই! ‘বরবাদ’ দেখে সব দর্শকই সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। একজন দর্শক বলেন, “সিনেমাটিতে শাকিব খানের যে লুক, সংলাপ পেয়েছি, এগুলো ‘তুফান’, ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় পাইনি। এজন্য ‘বরবাদ’ হিট সিনেমা। আর সিনেমার শেষে গল্পে যে টুইস্ট রাখা হয়েছে, এটি কল্পনাও করিনি।”
আরো পড়ুন:
মুক্তির পর শাকিবের ‘বরবাদ’ সিনেমা ফাঁস
টিভি পর্দায় ‘তুফান’
আরেকজন তরুণ দর্শক বলেন, “বাংলা সিনেমার ইতিহাসে সেরা সিনেমা ‘বরবাদ’। এরকম অ্যাকশন মুভি আগে কখনো বাংলাদেশে হয়নি।” ‘বরবাদ’ দেখে কেমন লেগেছে? এমন প্রশ্ন রাখা হয় একজন নারী দর্শকের কাছেও। তিনি বলেন, “অনেক ভালো লেগেছে। সিনেমাটি দেখে মন ভরে গেছে।”
মেহেদী হাসান নামে একজন তরুণ দর্শক বলেন, “বরবাদ’ জাস্ট ওয়াও! আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই আমার মিতা মেহেদী হাসান হৃদয়কে (সিনেমাটির পরিচালক)। বাংলাদেশের সেরা মুভি এটি।”
মধুমিতা সিনেমা হলে আগত দর্শকরাও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তরুণ এক দর্শক বলেন, “বরবাদ’ সিনেমা অস্থির, বলিউডের থেকে কম না।” এক যুবক বলেন, “ভাই, তামিল, ইংলিশ সিনেমার বাপ-দাদা ‘বরবাদ’।” ‘বরবাদ’ সিনেমার সিক্যুয়েল নির্মাণের দাবি জানিয়ে এক তরুণ বলেন, “গত বছর ‘তুফান’ দেখে মনে হয়েছিল এটাই সেরা সিনেমা। কিন্তু ‘বরবাদ’ সেই ভাবনা বদলে দিয়েছে। আমরা ‘বরবাদ’ সিনেমার সিক্যুয়েল চাই।”
সিনেমার গল্পটি শিক্ষণীয় দাবি করে এক তরুণ বলেন, “সিনেমাটি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। বাপের ভুলের কারণে সন্তানের খেসারত দিতে হয়। পাপ বাপরেও ছাড়ে না। শাকিব ভাইয়ের অভিনয় অসাধারণ। এটা আমাদের শাকিব ভাই কিনা তা নিয়ে দ্বিধান্বিত।”
অনেক দর্শকই দাবি করেছেন, পুরো তামিল সিনেমার মতো হয়েছে ‘বরবাদ’। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে বলছেন, ‘অ্যানিমেল’ সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এটি নির্মাণ করেছেন।
মুক্তির আগে থেকেই ‘বরবাদ’ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন হলমালিকরা। ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়টি সিনেমার মধ্যে ১২০টি হল পেয়েছে শাকিবের এই সিনেমা। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে শো বৃদ্ধি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যাও আরো বাড়তে পারে।
‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইধিকা পাল। এছাড়াও অভিনয় করেছেন যীশু সেনগুপ্ত, শহীদুজ্জামান সেলিম, মিশা সওদাগর, ইন্তেখাব দিনার, মামুনুর রশীদ প্রমুখ। একটি আইটেম গানে পারফর্ম করেছেন কলকাতার নায়িকা নুসরাত জাহান।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন বরব দ
এছাড়াও পড়ুন:
সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন
প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।
জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।
অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।
কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।
সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।