ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মিয়ানমারকে ৩০ লাখ ডলার অনুদান দেবে এডিবি
Published: 2nd, April 2025 GMT
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারকে মানবিক সহায়তা দিতে ৩০ লাখ ডলার অনুদান দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। গত ২৮ মার্চ ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারের জনগণের জরুরি ও মানবিক চাহিদা পূরণে এই অনুদান দেওয়া হবে।
এই অনুদান শিগগিরই ছাড় করা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) মাধ্যমে এই সহায়তা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী, পানীয় জল, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও আশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনায় সহযোগিতা দেওয়া হবে। নগদ সহায়তার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক চাহিদা পূরণ করাই এই অনুদানের লক্ষ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ভূমিকম্পের কারণে মিয়ানমারের চলমান মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এমনিতেই দেশটির মানুষ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ভূমিকম্পের কারণে তাদের চ্যালেঞ্জ আরও বেড়েছে।
এডিবির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক উইনফ্রিড উইকলেইন বলেছেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের ওপর ভূমিকম্পের প্রভাব নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি ত্রাণ সহায়তা করতে অবিলম্বে তিন মিলিয়ন বা ৩০ লাখ ডলার অনুদান ছাড়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এশীয় উন্নয়ন তহবিল ১৪-এর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট তহবিলের সম্পদ ব্যবহার করে আরও বড় পরিসরে সহায়তা দেওয়া যায় কি না, সেই বিবেচনা করছি আমরা।’
এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য দুর্যোগ মোকাবিলায় গঠিত তহবিল থেকে এই সহায়তা দেওয়া হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট বড় ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় এই তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হয়।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে এডিবি। নানাবিধ জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদস্য ও অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করে থাকে এডিবি। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবির সদস্যদেশ ৬৯, যার মধ্যে ৪৯টি দেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প অন দ ন তহব ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্বচ্ছতার জন্য ডিএনসিসির প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে:
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএনসিসির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পশ্চিম শেওড়াপাড়া, পশ্চিম কাজীপাড়া ও সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা, ৫ কিলোমিটার নর্দমা ও দেড় কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, ডিএনসিসির সব প্রকল্পের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রকল্পটি কবে শুরু হবে, কবে শেষ হবে, কতা টাকা বরাদ্দ আছে—এসব তথ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। এছাড়া, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ হলে নির্মাণ সামগ্রী কী, সেটা জনগণের জানা দরকার। যখন জনগণ জানবে, তখন তারা জবাবদিহি করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আমি গত সপ্তাহে কাউকে না জানিয়ে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে চলমান কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখলাম, রাস্তাকে ধরে রাখার জন্য যে ওয়াল (বিশেষ দেয়াল) দেওয়া হয়েছে, সেটার পিলার বানানোর কথা ছিল স্টোন দিয়ে; কিন্তু বানিয়ে রেখেছে ব্রিক দিয়ে। এটা বড় দুর্নীতি। স্থানীয় মানুষ যদি না জানে, কী নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তাহলে দুর্নীতি করাটা সহজ। তথ্যের যত বেশি আদান-প্রদান হবে, তথ্য যত বেশি পাবলিক করা হবে, জনগণ তত বেশি জবাবদিহি করতে পারবে। আমি ঠিকাদারকে জানিয়ে দিয়েছি, সঠিক নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করলে বিল দেব না। তারা বলেছে, এটা ঠিক করে দেবে।”
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, যার যার এলাকার কাজ তারা বুঝে নেবেন। বুঝে নেওয়ার জন্য যত তথ্য ও সহযোগিতা লাগবে, সেটা আমরা দেব। ডিএনসিসির ওয়েবসাইটে প্রকল্পের সব তথ্য ও ঠিকাদারের ফোন নম্বরসহ দেওয়া থাকবে। স্থানীয় জনগণ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কাজ বুঝে নেবেন। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হবে। এতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় সোসাইটি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতা পাচ্ছি। সবার অংশগ্রহণ বাড়াতে আমি বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের নিয়ে গণশুনানি করছি। প্রতি মাসে ফেসবুক লাইভে দেশে-বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের সাথে যুক্ত হচ্ছি। ডিএনসিসির সবার ঢাকা অ্যাপ আছে, সেটির পাসওয়ার্ড পর্যন্ত আমাদের দিচ্ছে না। আগে যারা ক্ষমতায় ছিলেন, তারা ৪ কোটি টাকা খরচ করে এই অ্যাপ বানিয়েছে। পাসওয়ার্ড না দিলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।”
ডিএনসিসির প্রশাসক বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় হকারদের জন্য হাটা যায় না। মানুষের অবাধ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা যাবে না। ঢাকা শহরে মানুষের চলাচলের অধিকার সবার আগে, সেই অধিকার আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। মিরপুর-১০ এর প্রধান সড়কের যত হকার ও অটোরিকশা আছে, সেগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যারা এ ধরনের ইনফরমাল পেশায় যুক্ত আছেন, তাদের পুনর্বাসনের জন্যও আমরা প্ল্যাটফর্ম করব। তাদের জন্যও বিকল্প ব্যবস্থা আমরা তৈরি করব। এই শহরটা সবার, সবাই একসাথে বসবাস করব; কিন্তু অন্যদের কষ্ট না দিয়ে, অন্যের অধিকার নষ্ট না করে।
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
ঢাকা/এএএম/রফিক