সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ঈশ্বরদীর দুই এসএসসি পরীক্ষার্থী মারা গেছে। ঢাকা ও রাজশাহীর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তারা মারা যায়। 
নিহত মো. হৃদয় (১৭) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মো. নয়ন (১৭) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার মারা যায়। 
হৃদয় উপজেলার সুলতানপুর পূর্বপাড়া গ্রামের হাদিস ব্যাপারীর ছেলে। আর নয়ন গাইবান্ধার মো.

কামাল হোসেনের ছেলে। সে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের বাড়াহুসিয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের নাতি। নয়ন নানাবাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত। তারা দুজনই দরগা বাজার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। 
নিহত দুজনের পারিবারিক সূত্র জানায়, ঈদের দিন মোটরসাইকেল চালিয়ে দুই বন্ধু বেড়াতে বের হয়। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার খিদিরপুর দেবোত্তর সড়কের বেরুয়ান-সরাবাড়িয়া এলাকায় তাদের মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে গুরুতর আহত হয় তারা। 
তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে হৃদয়কে রাজশাহী এবং নয়নকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নয়ন মারা যায়। ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় হৃদয়।
দরগা বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নয়ন ও হৃদয় দুজনেই এ স্কুলের ছাত্র ছিল। তাদের ১০ এপ্রিল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। 
এদিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর মোড়ে বাসের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে শারমিন (২৫) নামের এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুসহ চারজন। গতকাল শনিবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শারমিন গোদাগাড়ী উপজেলার হুজরাপুর এলাকার শামীম হোসেনের মেয়ে। আহতদের পরিচয় জানা যায়নি। হতাহতরা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, বাসটি ঘটনাস্থলে ফেলে চালক ও তার সহযোগীরা পালিয়ে গেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ফুডপ্যান্ডার ডেলিভারি বয় থেকে সফল ফ্রিল্যান্সার আবু সালেহ, মাসে আয় কত জানেন

পরিবারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অভাবের সংসারে নিজেকে একরকমের বোঝাই মনে করতেন। কিছু একটা করা দরকার। পরিস্থিতি যেন আবু সালেহ আহমেদকে দিন দিন আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অনেক স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্নে নিজেকে অটুট রেখেছেন। আর পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। ধৈর্য নিয়ে নিজের স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আজ সালেহ নিজেকে বলতেই পারেন একজন সফল ফ্রিল‍্যান্সার। কেননা এখন তিনি মাসে আয় করেন তিন লাখ টাকা।

আবু সালেহ আহমেদ। ডাকনাম আফনান। বাবা মো. কুতুব উদ্দিন শেখ মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এখন অবসর নিয়েছেন। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তারাপুর গ্রামের আবু সালেহ আহমেদ এখন অবশ্য এলাকায় থাকেন না। থাকেন ঢাকার কাঁঠালবাগানে। এখান থেকেই আফনান গড়ে মাসিক তিন লাখ টাকা আয় করেন। ছোট্ট একটা অফিসও নিয়েছেন, যেখানে চারজন ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান করেছেন।

২০১৬ সালে সেনগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাসের পর ২০২০ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন আবু সালেহ আহমেদ। এখন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে স্থাপত্য বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ছাত্রাবস্থাতেও তাঁর মাসিক আয় কোনো কোনো মাসে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২৭ বছর বয়সী আবু সালেহ আহমেদ বিয়ে করেছেন গত বছর। স্ত্রীর নাম ফাতেমা জোহরা।

পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াই ছিল কঠিন

আফনান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আসলে মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করে বের হয়েছি। তখন ইচ্ছা থাকলেও আমাদের সামর্থ্য ছিল না ভালো জায়গায় পড়ার। আমার চার বছর যে সম‍য়টা কেটেছে, আসলে খুব কষ্টে কেটেছে। কলেজে আমি এক্সট্রা কারিকুলামে ভালো ছিলাম, ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ছিলাম, বেশ কিছু জায়গায় বিতর্ক করে চাম্পিয়নও হয়েছি। স‍্যারদের চোখে পড়েছি। একসময় আর পেরে উঠছিলাম না, তাই দুই বছর পড়তে পড়তেই টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) নিতে গিয়েছিলাম। লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকেরা আমার কথা শুনে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যার ফলে আমি পড়াশোনাটা শেষ করেছি।’

আবু সালেহ আহমেদ প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘দিনগুলো কঠিন ছিল। টিউশনি করাতাম। ১ হাজার ৫০০ টাকা পেতাম। ১ হাজার টাকা মেসভাড়া ও ৫০০ টাকায় খাওয়া। সকালে ও রাতে খেতাম। মাসে তা–ও খাওয়ার বিল আসত ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। মেসের বাকিরা সেটা দিয়ে দিত। তারপর একদিন ২ হাজার ৫০০ টাকার একটা টিউশনি পেয়ে একটু যেন শক্তি পেলাম। এভাবেই আমার ডিপ্লোমার চার বছর কেটেছে।’

একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায়

২০২০ সালে ডিপ্লোমা পড়া শেষ করেই একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আবু সালেহ আহমেদ। এসেই শুরু করেন আবার জীবনসংগ্রাম। কোথাও কাজ পাচ্ছিলেন না। শেষমেশ ফুডপ্যান্ডায় রাইডার (ডেলিভারি বয়) হিসেবে কাজ নেন তিনি। কিন্তু শুধু ফুডপ্যান্ডায় কাজের আয় দিয়ে তাঁর চলছিল না। তখন থেকেই কাজের পাশাপাশি কিছু একটা করার চেষ্টা করছিলেন। কিছু জায়গায় খোঁজ নিয়ে ভর্তি হয়ে যান তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটিতে। খাবার ডেলিভারির পাশাপাশি কাজও শিখতেন।

আবু সালেহ আহমেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুডপ্যান্ডার ডেলিভারি বয় থেকে সফল ফ্রিল্যান্সার আবু সালেহ, মাসে আয় কত জানেন