গণিতের অনেক অমীমাংসিত ধাঁধা রয়েছে। এসব ধাঁধার গাণিতিক সমাধানের জন্য যুগের পর যুগ ধরে চেষ্টা করছেন বিভিন্ন দেশের গণিতবিদেরা। সম্প্রতি শত বছরের পুরোনো কাকেয়ার অনুমান বা কনজেকচার নামে পরিচিত এক গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতবিদ হং ওয়াং ও কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জোশুয়া জাহল।

১৯১৭ সালে গণিতবিদ সোইচি কাকেয়া প্রশ্ন করেন, একটি সমতলের ক্ষেত্রফল কত ছোট হলে তার মধ্যে একক দৈর্ঘ্যের একটি সুই ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরানো সম্ভব? কল্পনা করুন, একটি টেবিলের ওপর এক মিটার লম্বা একটি লাঠি আছে। আপনি লাঠির মাঝখানে ধরে সেটিকে ঘড়ির কাঁটার দিকে ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে চান। তবে কাকেয়ার প্রশ্নটি ছিল সুই নিয়ে। কত ক্ষুদ্র জায়গার মধ্যে একটি সুই আপনি ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাতে পারবেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে গণিতের দুনিয়ায় কাকেয়া সেটের ধারণা তৈরি হয়। এটিকে বেসিকোভিচ সেট বলা হয়।

আরও পড়ুনশত বছরের পুরোনো গাণিতিক সমস্যার সমাধান করলেন এক তরুণী২৫ মার্চ ২০২৫

গণিতবিদ হং ওয়াং ও জোশুয়া জাহল ত্রিমাত্রিক সমাধান তৈরি করে দীর্ঘদিনের এই অমীমাংসিত গাণিতিক ধাঁধার সমাধান করেছেন। ত্রিমাত্রিক সমাধানটির বিষয়ে অপর গণিতবিদ ইয়াল লুবেটস্কি বলেন, এটিকে একুশ শতকের শীর্ষ গাণিতিক অর্জনের একটি বলা যায়।

আরও পড়ুন২০২৫ সালের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছেন গণিতবিদেরা, কেন২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

১৯৭১ সালে গণিতবিদ রয় ডেভিস কাকেয়ার ধাঁধার দ্বিমাত্রিক সমাধান করেছিলেন। এর পর থেকে গণিতবিদেরা অসীম মাত্রায় সমস্যাটির সমাধান করতে চেষ্টা করতে থাকেন। এত দিন গণিতবিদদের ধারণা ছিল, ঘূর্ণমান কোনো সুইকে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ কম স্থানিক মাত্রায় ঘোরানো সম্ভব। এবার সেই ধারণাকে পেছনে ফেলে গণিতবিদ হং ওয়াং ও জোশুয়া জাহল গাণিতিক ধাঁধাটির ত্রিমাত্রিক সমাধান করেছেন।

সূত্র: সায়েন্টিফিক আমেরিকান

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ