স্টার্টআপ খাতের নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে শুধু স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন জোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট বা বিনিয়োগ সম্মেলনে ‘স্টার্টআপ কানেক্ট’ অধিবেশনে প্যানেল আলোচনায় এসব কথা জানান গভর্নর। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানান তিনি।

সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে চার দিনের এ বিনিয়োগ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলন আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।

সম্মেলনের স্টার্টআপ কানেক্ট অধিবেশনে দেশি-বিদেশি তরুণ ও উদ্ভাবনী উদ্যোক্তারা অংশ নেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য—এম্পাওয়ারিং ইনোভেশন কানেকটিং অপরচুনিটি।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে স্টার্টআপ খাতের এ তহবিল বিতরণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘স্টার্টআপগুলোর লাভ এক দিনেই আসে না। আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে, আপনাকে অধ্যবসায় করতে হবে।’

সুযোগ দিলে দেশে বিকাশের মতো দশটি ইউনিকর্ন বানানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, ‘আমি বিকাশের মতো আরও কয়েকটি ইউনিকর্ন দেখতে চাই। বিকাশের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এটা করতে পারি। আমি আশা করি, আমাদের তরুণ প্রজন্ম হাল ছাড়বে না।’

অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে রেকর্ড করা বক্তব্য দেন লিংকডইনের সহপ্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যান। প্যানেল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি–বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব, আইসিটি সচিব শীশ হায়দার চৌধুরী।

সেমিনারে মুল প্রবন্ধে বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনা তুলে ধরেন কনস্টিলেশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির চেয়ারম্যান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তানভীর আলী। তিনি বলেন, দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে উদ্ভাবনী, স্টার্টআপ উদ্যোগের চাহিদা বেশি। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে স্টার্টআপ খাতে এখনো বিনিয়োগ কম।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা করার লাইসেন্স পাওয়াসহ সরকারি লালফিতার দৌরাত্ম্য বেশ রয়েছে। প্রতিবছর বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের।

ইন্টারনেট কখনো বন্ধ হবে না

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি–বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘ইন্টারনেট আর কখনো বন্ধ হবে না। ভবিষ্যৎ সরকার যাতে এটা বন্ধ করতে না পারে, আমরা সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। টেলিকম অ্যাক্ট ২০০১–এ ইন্টারনেট বন্ধ করার বিধান আছে; আমরা সেটি বাতিল করার জন্য কাজ করছি, যাতে পরবর্তী সরকারগুলো আইনের সুযোগ নিয়ে ইন্টারনেট বন্ধ করতে না পারে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ট র টআপ ব যবস তহব ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ