এস কে নিলয়ের ‘বউ’ সিনেমায় অভিনয় করছেন অভিনেত্রী ইয়ামিন হক ববি। সিনেমার ৩টি গানের কাজ শেষ হলেই ক্যামেরা ক্লোজ করবেন নির্মাতা। একই নির্মাতার নতুন সিনেমায়ও অভিনয় করতে যাচ্ছেন ববি। এমনটি জানিয়েছেন নির্মাতা। সিনেমার নাম ‘দিওয়ানা’।
ববির সঙ্গে ইতোমধ্যে প্রাথমিক আলাপ সেরেছেন নির্মাতা। এর কাহিনি লিখছেন দেলোয়ার হোসেন দিল। এটি শহুরে গল্প। এ কারণে রাজধানীতে হবে দৃশ্যধারণ। ববির বিপরীতে কে অভিনয় করবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
নিলয় বলেন, “ববিকে নিয়ে ‘বউ’ সিনেমার কাজ করছি। তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম কাজ ছিল এটি। সহযোগিতাপরায়ণ একজন শিল্পী। আমার পরবর্তী ‘দিওয়ানা’ সিনেমার জন্য তাঁকেই মানানসই মনে হয়েছে। এ কারণে তাঁকে নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছি। তাঁর বিপরীতে নায়ক হিসেবে পরিচিত একজন মুখই থাকছেন। নামটি এখনই প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। চমক হিসেবে থাকুক। শিগগিরই সিনেমার কাজ শুরু করব। তখনই নামটি সবাই জেনে যাবেন।”
‘খোঁজ দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন ববি। সে হিসেবে শোবিজে তাঁর পথচলা দেড় দশকের বেশি। এ পথচলা মোটেই সহজ ছিল না। নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। অভিনয় ক্যারিয়ারে ববি উপহার দিয়েছেন– ‘দেহরক্ষী’, ‘রাজত্ব’, ‘অ্যাকশন জেসমিন’, ‘বিজলী’, ‘বেপরোয়া’, ‘নোলক’-এর মতো সিনেমা। বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিনেমা। তাঁর অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল ‘ময়ূরাক্ষী’। রাশিদ পলাশ পরিচালিত রহস্যধর্মী এ সিনেমাটি গত বছর মুক্তি পেয়েছিল। এতে তাঁর বিপরীতে দেখা গেছে সুদীপ বিশ্বাস দ্বীপকে। যদিও সিনেমাটি ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি।
নতুন কাজ নিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, “দিওয়ানা’ সিনেমার বিষয়ে কথা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাজ করব। বেশ কিছুদিন আগেই ‘বেইমান’ সিনেমার শুটিং করেছি। ‘বউ’ সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নেব। এরপর বদিউল আলম খোকনের পরিচালনায় ‘তছনছ’ সিনেমার শুটিং শুরু করব। দেশের বাইরে আরও একটি সিনেমার কথা হচ্ছে। বলা চলে কাজের মধ্যেই আছি। অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই।”
অভিনয়ের বাইরে প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ববি। অভিনয়ের পাশাপাশি আর্থিক নিরাপত্তার জন্য শিল্পীসত্তার বাইরে একজন শিল্পীর অনেক মাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলে মনে করেন এ নায়িকা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একজন শিল্পী সবসময়ই শিল্পী। তবে এ শিল্পীসত্তার বাইরে তাঁকে অনেক মাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একটা মানুষের অনেক কোয়ালিটি থাকতে পারে। যদি কেউ ব্যবসা করে কিংবা অন্য কোনো পেশার সঙ্গে জড়িত হয় তাতে সমস্যার কিছু নেই। এতে একজন শিল্পীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বাড়ে। তবে ফোকাসটা অভিনয়ের ওপরই হওয়া উচিত। আমি নিজেও ব্যবসা করি। কিন্তু আমার মূল ফোকাস অভিনয়।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: একজন শ ল প
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাস্থ্যে সংস্কারের উদ্যোগ চোখে পড়ছে না
স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের বিষয়গুলো সরকারের মনোযোগের কেন্দ্রে থাকা উচিত। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। বরং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে।
গতকাল রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘স্বাস্থ্য পদ্ধতি সংস্কার: আমরা কোথায়’ শীর্ষক নীতি সংলাপে অর্থনীতিবিদ, জনস্বাস্থ্যবিদ ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য এই কথা বলেন। বেসরকারি চিন্তক প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও নাগরিক সংগঠন ইউএইচসি ফোরাম যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে। এ আয়োজনে সহায়তা করে ইউনিসেফ।
সংলাপে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন হয়েছে এবং তারা একটি প্রতিবেদন দিয়েছে, এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করা। বাস্তবায়নে বুদ্ধিমত্তা, অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং কোন কাজের পর কোন কাজ বা কোন কাজের সঙ্গে কোন কাজ (সিকোয়েন্সিং) সেই বিষয়গুলো ঠিক করা দরকার।
প্রথম উপস্থাপনায় ইউএসসি ফোরামের সদস্য জনস্বাস্থ্যবিদ মো. আমিনুল হাসান বলেন, সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রথমেই দরকার একটি টাস্কফোর্স তৈরি করা। টাস্কফোর্সের কাজ কী হবে তার বিশদ বর্ণনা করেন তিনি। সংস্কারের শেষ কাজটি হবে স্বাস্থ্য কমিশন গঠন। কমিশন গঠিত হলে টাস্কফোর্সের বিলুপ্তি ঘটবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এম এ ফয়েজ বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন প্রতিবেদনে ৬০০ এর বেশি সুপারিশ রয়েছে। সব সুপারিশই সঠিক, সব বাস্তবায়ন করা উচিত। অত্যাবশ্যক প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং অত্যাবশ্যক জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কেউ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে এক শ দিনও সময় নেই। যা করার দ্রুত করতে হবে। কেউ বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে সরকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে, সংস্কারকাজ আর এগোবে না। একজন বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে স্বাস্থ্য যেন গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পায় তার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হওয়া জরুরি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারি করতে পারে। একইভাবে স্বাস্থ্য কমিশন অধ্যাদেশের মাধ্যমে গঠন করতে পারে।
আমলাতন্ত্র যেকোনো সংস্কারের সবচেয়ে বড় বাধা—এমন মন্তব্য করে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের অন্য একজন সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ আকরাম হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হযবরল অবস্থা। এ রকম অগোছালো মন্ত্রণালয় আর একটিও নেই। এখনই বড় কোনো কিছু করার উপযুক্ত সময়।’
অনুষ্ঠানে একাধিক আলোচক বলেন, বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় স্বাস্থ্য খাত নেই।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বিশ্বের যেসব দেশে রাষ্ট্রপ্রধানেরা স্বাস্থ্যের জন্য উদ্যোগী ও সক্রিয় হয়েছেন, সেখানে স্বাস্থ্যে উন্নতি হয়েছে। এ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে তা দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ওষুধ খাত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফের প্রতিনিধি ছাড়াও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এনজিও এবং দেশি এনজিওর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান।