‘হাজারটা চাঁদ আসলেও সে রাতের কোনো মূল্য নাই, যদি তুমি না আসো, সেই রাতের কোনো অর্থই নাই।’ শায়েরির এই আবেগ ছুঁয়ে ছিল পুরো সিনেমা। হল থেকে বের হওয়ার পরও সেই আবেগের রেশ রয়ে যায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার যাত্রা শেষে সিনেমার পাত্র–পাত্রীরা ততক্ষণে যে হয়ে ওঠে অতি আপন। মফস্সল শহরের চেনা সব চরিত্র, জমাটি চিত্রনাট্য, দুর্দান্ত নির্মাণ, মনে রাখার মতো সংলাপ আর বিশ্বাস্য অভিনয় মিলিয়ে ‘দাগি’ হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা বাংলা সিনেমা। আফরান নিশো ও শিহাব শাহীনের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা কাজ বললে বাড়াবাড়ি হবে না।
ট্রেলারে যেমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, গল্পটা তেমনই। এক দাগির প্রায়শ্চিত্তের যাত্রা। প্রেক্ষাপট উত্তরবঙ্গের সৈয়দপুর, সময়কাল চলতি শতকের প্রথম দিক। নিশান (আফরান নিশো) আর জেরিন (তমা মির্জা) এই মফস্সল শহরের প্রেমিক যুগল। নিশানের পড়াশোনায় আগ্রহ নেই, অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার ধান্দায় জড়িয়ে পড়ে চোরাচালানে। যোগাযোগ হয় কলকাতার এক অবাঙালি ব্যবসায়ীর সঙ্গে (শহীদুজ্জামান সেলিম)। জেরিন ভালোভাবে ডিগ্রি পাস করেছে, একের পর এক বিয়ের সম্বন্ধ আসছে। এর মধ্যে জেরিনকে পছন্দও করে ফেলে এক পাত্রপক্ষ। জেরিন নিশানকে বলে ১৫ তারিখে দেখা করতে, সেদিন কিছু একটা করতেই হবে। কিন্তু, অসাবধানতাবশত এক দুর্ঘটনায় নিশানের হাতে খুন হয় একজন। নিশানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয়।
সাজা শেষে বাড়িতে ফেরে নিশান। এখন থেকেই শুরু হয় সিনেমা। নিশানের আশা ছিল, আবার নতুন করে জীবন শুরু করবে, পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে। কিন্তু লাল দালানের ছাপ একবার যার গায়ে লেগেছে, চাইলেই কি আর সেই দাগি স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে, সমাজ কি তাকে মেনে নেয়? সম্পর্ক, আবেগ, সামাজিক বাস্তবতা আর নিশানের মানসিক টানাপোড়েন নিয়ে এগিয়ে চলে গল্প।
একনজরেসিনেমা: দাগি
ধরন: ড্রামা
গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও পরিচালনা: শিহাব শাহীন
অভিনয়: আফরান নিশো, তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহীদুজ্জামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, রাশেদ মামুন অপু
রানটাইম: ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট‘দাগি’ সিনেমার দৃশ্যে আফরান নিশো ও তমা মির্জা.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ
এছাড়াও পড়ুন:
সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি ঘিরে উত্তেজনা এখন চূড়ান্তে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজে ইংল্যান্ড এগিয়ে থাকলেও পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি একটি পরিণতির লড়াই হিসেবে সমাসন্ন। তবে ঠিক এই সময়েই বড় দুঃসংবাদ এসে আঘাত হেনেছে ইংলিশ ড্রেসিংরুমে। ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ নির্ধারণী ওভাল টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন অধিনায়ক বেন স্টোকস।
বুধবার (৩০ জুলাই) ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, ওভালে মাঠে নামা হচ্ছে না স্টোকসের। ম্যানচেস্টারে চতুর্থ টেস্টে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের মাধ্যমে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন তিনি। ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শী স্টোকস ছিলেন দলের ভারসাম্য ধরে রাখার অন্যতম স্তম্ভ। তার অনুপস্থিতি তাই শুধু একজন খেলোয়াড়কে হারানো নয়, বরং একটি জয়ের প্রত্যয়ের বড় চ্যাপ্টারও হারানো।
এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাবেন ওলি পোপ। যিনি প্রথমবারের মতো সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় দলের।
আরো পড়ুন:
শেষ ম্যাচের আগে ভারতের শিবিরে ধাক্কা, বিশ্রামে বুমরাহ
ওভাল টেস্টের ইংল্যান্ড দল ঘোষণা, ওভারটনের প্রত্যাবর্তন
স্টোকস ছাড়াও ওভাল টেস্টে দেখা যাবে না জোফরা আর্চার, ব্রাইডন কার্স ও লিয়াম ডসনকে। চোট ও ফিটনেস ইস্যুর কারণে তারা বাদ পড়েছেন স্কোয়াড থেকে।
অবশ্য একাদশে ফিরেছেন দুই পরিচিত মুখ জশ টাঙ ও জেমি ওভারটন। বিশেষ নজর কেড়েছেন গাস অ্যাটকিনসন। যিনি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মে মাসে খেলার পর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ছিলেন মাঠের বাইরে। সারে কাউন্টির হয়ে ফের মাঠে ফিরে জায়গা পেয়েছেন জাতীয় দলে। ইংল্যান্ডের পেস বিভাগে তার উপস্থিতি বাড়াবে গতি ও ধার।
চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন বেন স্টোকস। চার ম্যাচে তার ঝুলিতে ১৭ উইকেট। ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারতের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার ও ব্যাটে সেঞ্চুরি করে একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছিলেন। লর্ডসেও দুই ইনিংস মিলিয়ে রান করেছেন ৭৭, নিয়েছেন আরও পাঁচ উইকেট।
তাই ইংলিশ শিবির শুধু একজন ব্যাটার বা একজন বোলার হারায়নি, তারা হারিয়েছে একজন পূর্ণাঙ্গ ম্যাচ উইনারকে। স্টোকসের মতো একজন অলরাউন্ডার যিনি প্রয়োজনের সময় ছায়ার মতো আক্রমণে নেতৃত্ব দেন এবং ব্যাট হাতে গড়েন ম্যাচের ভিত, তার অভাব যে দলকে নাড়া দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ:
জ্যাক ক্রাউলি, বেন ডাকেট, ওলি পোপ (অধিনায়ক), জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জ্যাকব বেথেল, জেমি স্মিথ (উইকেটকিপার), ক্রিস ওকস, গাস অ্যাটকিনসন, জেমি ওভারটন ও জশ টাঙ।
ঢাকা/আমিনুল