সাতক্ষীরার আলিপুরে আব্দুস সবুর ও তার ভাই আব্দুর রউফের দখলে থাকা প্রায় ৩০ বিঘা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় জমি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে খাস জমি দখল মুক্ত করণে টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এতথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ। 

সভায় জানানো হয়, ভূমিদস্যুদের দখলে যে সমস্ত খাস জমি রয়েছে সেগুলো উদ্ধারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খাস জমি উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদের আওতাধীন জেলার বিভিন্ন স্থানে যে সমস্ত খাস জমি অবৈধভাবে দখলে রয়েছে সেগুলো স্ব স্ব বিভাগকে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অভিযান চালিয়ে ওইসব জমি উদ্ধার করা হবে।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, “গত দুইদিনে সদর উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নে আব্দুস সবুর ও তার ভাই আব্দুর রউফের দখলে থাকা প্রায় ৩০ বিঘা (৯.

৬৮ একর) সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যা সড়ক ও জনপদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা। এসব খাস জমি অবৈধভাবে ভরাট করে ট্রাক টার্মিনালসহ স্থাপনা ও জল মহল করা হয়েছিল। সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় অবৈধ স্থাপনাগুলো ইতিমধ্যে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “সাতক্ষীরার এক খণ্ড সরকারি জমি যাতে ভূমিদস্যু ও জবরদখলকারীর হাতে না থাকে সে লক্ষ্যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

সভায় উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সেনা ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট লাবিব, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, আরডিসি মো. পলাশ আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ, সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অতিশ কুমার সরকার, সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দীন আহেমদ, এলজিইডির নির্বাহী প্রেকৌশলী কামরুজ্জামানসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহম দ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

উপকূল রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ধস, প্লাবনের আশঙ্কা সুন্দরবন তীরবর্তী জনপদে

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মালঞ্চ নদীর চর দেবে গিয়ে উপকূল রক্ষা বাঁধের পাঁচ নম্বর পোল্ডারের সিংহড়তলী অংশে ভয়াবহ ধসের সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার দুপুরে শুরু হওয়া ধস আজ সোমবার আরও গুরুতর আকার ধারণ করেছে। এর আগে শুক্রবার রাতে আকস্মিকভাবে চুনকুড়ি ও সিংহড়তলী এলাকায় চর দেবে যাওয়ার পর থেকেই বাঁধে ধস শুরু হয়।

খবর পেয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কাজ করছেন।

ধস একেবারে জনবসতির কোল ঘেঁষে হওয়ায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নদীতে জোয়ারের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাঁধের অবশিষ্ট দুই থেকে আড়াই ফুট অংশ যে কোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে। এতে সুন্দরবন তীরবর্তী কয়েকটি জনপদ লবণ পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মালঞ্চ নদীর ছয়টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিলেও সিংহড়তলী অংশের অবস্থা সবচেয়ে সংকটাপন্ন। তারা জানান, দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা না হলে পরবর্তী জোয়ারে সাত থেকে আটটি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।

স্বেচ্ছাসেবক আব্দুর রাজ্জাক সমকালকে বলেন, ‘মাত্র সাত-আট মাস আগে এখানে মাটির কাজ হয়েছিল। বাঁধের পাশে অতিরিক্ত মাটি নেওয়ায় বাঁধ অনেকটা খাড়া হয়ে ছিল। কয়েকদিন ধরে ফাটল দেখা দেয়ার পর শনিবার থেকে ধস শুরু হয়। পাউবো তাৎক্ষণিকভাবে জিওশিট চাপিয়ে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করলেও শনিবার রাতে সবকিছু ধসে যায়।’

স্থানীয় বনজীবীদের নেতা বাবলুর রহমান সমকালকে বলেন, শনিবার দুপুরে বাঁধের প্রায় ৩০ ফুট অংশ নদীতে ধসে পড়ে। রোববার সকালের জোয়ারে আরও এক দফা ধসের পর বাঁধের অবশিষ্ট উচ্চতা এখন মাত্র দেড় থেকে দুই ফুট। তিনি বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সিংহড়তলী, চুনকুড়ি, হরিনগর, যতীন্দ্রনগর, ছোট ভেটখালীসহ অন্তত সাতটি গ্রাম তাৎক্ষণিকভাবে প্লাবিত হতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নীপা রানী সমকালকে বলেন, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ছয়টি অংশে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সিংহড়তলীর অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বসতবাড়ির পাশে ভাঙন দেখা দেয়ায় এলাকাবাসী উদ্বাস্তু হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অনেকেই ইতোমধ্যে একাধিকবার সর্বস্ব হারিয়েছেন।

ঘটনাস্থলে থাকা পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন সমকালকে বলেন, শনিবার বিকেলে ভাঙন কবলিত অংশে শতাধিক জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলেও তাতে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি। এখন বাঁধের ভেতর দিয়ে ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি জানান, রোববার রাতের মধ্যে বিকল্প বাঁধ নির্মাণ শেষ করা গেলে বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হবে।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রনী খাতুন সমকালকে বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ভাটার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। পানি নামলে শত শত গ্রামবাসীকে নিয়ে ভাঙন রোধে পুনরায় কাজ শুরু করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো ‘জনপদের বর্ষবরণ ১৪৩২’
  • বাঁধভাঙা বন্যার গল্প
  • উপকূল রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ধস, প্লাবনের আশঙ্কা সুন্দরবন তীরবর্তী জনপদে