নিউ ইয়র্কে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নদীতে, নিহত ৬
Published: 11th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের হাডসন নদীতে পর্যটকদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে তিন শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, পাঁচ সদস্যের পরিবারটি স্পেনের এবং ষষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন পাইলট। দুর্ঘটনার সময় সবাই হেলিকপ্টারে ছিলেন।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ জানিয়েছেন, পরিবারগুলোকে অবহিত না করা পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করা হবে না। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তাধীন।
ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হেলিকপ্টারটি আকাশ থেকে উল্টে পড়ে হাডসন নদীতে পড়ে যাচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিউ জার্সির উপকূল ধরে যাওয়ার জন্য জর্জ ওয়াশিংটন ব্রিজে বাঁক নেওয়ার পরপরই হেলিকপ্টারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
হেলিকপ্টারটি নিউ ইয়র্ক হেলিকপ্টার সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫৯ মিনিটে ম্যানহাটনের নিচের দিকে ডাউনটাউন স্কাইপোর্ট থেকে এটি উড্ডয়ন করেছিল।
নিউ ইয়র্কের দমকল কমিশনার রবার্ট টাকার বলেন, দুর্ঘটনার প্রথম খবর আসে বেলা ৩টা ১৭ মিনিটে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর, উদ্ধারকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত বা জীবিতদের জন্য পানিতে অনুসন্ধান করে। ঘটনাস্থলেই চারজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকী দুজনকে নিকটবর্তী হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।