রাষ্ট্র যদি গুণগত মৌলিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে না যায়, যদি একই রাষ্ট্রকাঠামো থেকে যায়, তাহলে জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘নববর্ষের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে নবায়ন করা, হালখাতার মাধ্যমে ধার-দেনা সবকিছু শোধ করা হয়। আমরা চাই যে এই রাষ্ট্রেরও নবায়ন হোক। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সেই নবায়নের সূচনা হয়েছে।’

আজ সোমবার পয়লা বৈশাখের সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের নেভি গলিতে বৈশাখ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এনসিপি। এই আয়োজনে ছিল বাউলগান। এ ছাড়া নববর্ষকে স্বাগত জানাতে চৈত্রসংক্রান্তির রাতে (রোববার) বাংলামোটর এলাকার সড়কে আলপনা এঁকেছে দলটি।

বৈশাখ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের এজেন্ডা সামনে নিয়ে এগোচ্ছে এনসিপি। জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলো এখন আর সমভাবে ধারণ করছে না।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান কেবল কোনো ব্যক্তি বা দলের পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং রাষ্ট্রের আমূল কাঠামোর পরিবর্তন ও ইনসাফভিত্তিক একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছিল বলে উল্লেখ করেন এনসিপির আহ্বায়ক। তিনি বলেন, ‘আমরা বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ চেয়েছি সরকারের কাছে। বিচার ও সংস্কারের মধ্য দিয়েই আমরা গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচনের দিকে এগোতে চাই। আমরা মনে করি, এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের জাতিগত নবায়ন সম্ভব, সেই নবায়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা সম্ভব।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈশাখ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে বাউল গান পরিবেশনা। আজ সোমবার পয়লা বৈশাখের সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের নেভি গলিতে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা