বাংলা বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানাতে বাঙালি মেতে উঠেছে নানা আয়োজনে। দিনটিকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের সর্বত্রই বইছে উৎসবের আমেজ। জাতি-গোত্র-বর্ণ সব ভেদাভেদ ভুলে সবাই একযোগে দিনটি উদযাপন করেছে। তবে স্বৈরাচার মুক্ত ২৪ এর নতুন বাংলাদেশে কেমন‌ কাটলো শিক্ষার্থীদের নববর্ষ, তা জানতে রাইজিংবিডির কথা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীর সঙ্গে।

অগণতান্ত্রিক পরিবেশ আমাদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছিল

নববর্ষ মানেই নতুন আশা, নতুন দিনের হাতছানি। কিন্তু গত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, কিভাবে একটি অগণতান্ত্রিক পরিবেশ আমাদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে। এবারের পহেলা বৈশাখ আমাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আমরা একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে বর্ষবরণ করতে পারছি। এই নতুন সূর্যোদয় আমাদের মনে সাহস জুগিয়েছে, স্বপ্ন দেখিয়েছে একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। যেখানে আমরা নির্ভয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারব, যেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।
(লেখক: ফারিহা সাঈদ, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, অর্থনীতি বিভাগ)

আরো পড়ুন:

সুরে-গানে-তালে বৈশাখকে বরণ করল রাবি

নববর্ষে থাকবে রাবি অধ্যাপকের ৩০০ ফুটের স্ক্রলচিত্র প্রদর্শনী

ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে মুক্তভাবে জ্ঞানচর্চা করতে পারব

শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা সবসময় একটি জ্ঞানভিত্তিক, প্রগতিশীল সমাজের স্বপ্ন দেখি। কিন্তু ফ্যাসিবাদী শাসনের যাতাকলে আমাদের সেই স্বপ্ন প্রায় ধূলিসাৎ হতে চলেছিল। মুক্তচিন্তার অভাব, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ এবং ছাত্র রাজনীতির নামে সন্ত্রাস- আমাদের ক্যাম্পাসগুলোকে বিষিয়ে তুলেছিল। ২০২৫ সালের এই নববর্ষ আমাদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই ফ্যাসিবাদ মুক্ত পরিবেশে আমরা আবার মুক্তভাবে জ্ঞানচর্চা করতে পারব, নিজেদের অধিকারের জন্য সোচ্চার হতে পারব।
(লেখক: তানভীর খান তরুণ, শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ)

ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে আমরা বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছি

পহেলা বৈশাখ শুধু একটি উৎসব নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি, আমাদের ঐতিহ্যের ধারক। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে আমরা দেখেছি কিভাবে একটি বিশেষ গোষ্ঠী তাদের সংকীর্ণ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য আমাদের সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিল। নববর্ষের আনন্দ উদযাপনও তাদের রক্তচক্ষু এড়িয়ে যেতে পারেনি।

এ বছর, একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে আমরা বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছি, নিজেদের সংস্কৃতিকে আপন মহিমায় উদযাপন করতে পারছি। এই নববর্ষে আমাদের প্রতিজ্ঞা, আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে রক্ষা করব, তার বিকাশ ঘটাব এবং বিশ্ব দরবারে তুলে ধরব।
(লেখক: নাদিয়া হক মিথি, শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষ, লোক প্রশাসন বিভাগ)

আমরা গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারব

তরুণ প্রজন্ম সবসময় পরিবর্তনের অগ্রদূত। আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক, গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু ফ্যাসিবাদী শাসনে আমাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে বহু বাধা এসেছে। ভোটাধিকার হরণ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া এবং ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর দমন-পীড়ন আমাদের হতাশ করেছিল। জুলাই আন্দোলনের পর এ নববর্ষ আমাদের মনে নতুন আশা জাগিয়েছে।

আমরা বিশ্বাস করি, এই ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে আমাদের ভোটাধিকার সুরক্ষিত হবে এবং একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে আমরা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারব।
(লেখক: ফজলে রাব্বী পরশ, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, আরবি বিভাগ)

এই নববর্ষ আইনের শাসনের প্রত্যাশা নিয়ে এসেছে

একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে আইনের শাসন অপরিহার্য। কিন্তু গত কয়েক বছরে আমরা দেখেছি কিভাবে আইনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে, কিভাবে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হওয়ার পর এই নববর্ষ আমাদের জন্য আইনের শাসনের প্রত্যাশা নিয়ে এসেছে।

আমরা বিশ্বাস করি, এখন থেকে আইনের চোখে সবাই সমান হবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে আর কোনো বাধা থাকবে না।
(লেখক: আবু সালেহ শোয়েব, শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ)

বিদ্বেষ ভুলে সবাই মিলে ভালোবাসার বাংলাদেশ গড়ে তুলি

পহেলা বৈশাখ মানে মিলনমেলা, নতুন করে সম্পর্কের সূচনা। কিন্তু একটি বিভেদ সৃষ্টিকারী শাসন আমাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছিল, ভয় আর অবিশ্বাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করেছিল। নতুন বাংলাদেশে এই নববর্ষ আমাদের জন্য সেই দূরত্ব ঘোচানোর। আবার একসঙ্গে হাসার সুযোগ নিয়ে এসেছে। একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশে আমরা আবার ঐক্যবদ্ধ হতে পারব, একে অপরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারব এবং একটি সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারব। এ নববর্ষে আমাদের কামনা, বিদ্বেষ ভুলে আমরা সবাই মিলে একটি ভালোবাসার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
(লেখক: ফাহিমা‌ করিম বন্যা, শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষ, ইনফরমেশন সাইন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ)

ঢাকা/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র স পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

খেলাপি ঋণে বাংলাদেশ এশিয়ায় কেন শীর্ষে

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে মন্দ বা খেলাপি ঋণ অনেক দিনের বিরাট সমস্যা। শুরুতে শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় এ ব্যাধি বিদ্যমান হলেও পরবর্তী সময়ে বৃহৎ ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকেও ছড়িয়ে পড়ে। এটি, তথা ঋণখেলাপির সংস্কৃতি ধীরে ধীরে এক মহিরুহ আকার ধারণ করেছে।

গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের লুকানো খেলাপি ঋণ বের হয়ে আসছে। আবার অনেক আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের ঋণও খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। তাতে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ এক বছরের ব্যবধানে মোট ঋণের ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা ঋণের এক-চতুর্থাংশের বেশি এখন খেলাপি।

 সম্প্রতি প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের দিক থেকে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের শীর্ষে উঠে আসার বিষয়টি সামনে এসেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থিক বিভিন্ন সূচকের অবস্থা নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। অবশ্য খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ২০২৩ সালের তথ্য। তাতেই বাংলাদেশ শীর্ষে। এটি যে ২০২৫ সালে অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আমরা জানি।

আগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কায়দায় বাংলাদেশে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হতো। অন্যদিকে সহজে ঋণ পুনঃ তফসিল ও পুনর্গঠন করার কারণেও খেলাপি ঋণ কম ছিল। এখন ঋণমানে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করা শুরু হয়েছে। আবার ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা ও আওয়ামী রাজনীতি–সমর্থিত ব্যক্তিদের ব্যবসা খারাপ হয়ে পড়ায় খেলাপি ঋণ বাড়ছে।

খেলাপি ঋণ এভাবে বাড়তে থাকলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে, সন্দেহ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করতে উদ্যোগ নিতে হবে। যাঁরা ভালো ব্যবসায়ী, তাঁরা যেন আবার ব্যবসা শুরু করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে। সেটি নিয়ে সরকার কাজও করছে।

 এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। ২০২৩ সাল শেষে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে প্রতিবছরই বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের হার বেড়েছে। ২০২১ সালে এই হার ছিল ৮ শতাংশ, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মতো ২০২১ সাল থেকে খেলাপি ঋণ বেড়েছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কার।

দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর খেলাপি ঋণ কমেছে। যেমন ভুটানের খেলাপি ঋণের হার ২০২০ সালে ছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০২২ সালে কমে হয়েছে ৩ শতাংশ। ভারতের খেলাপি ঋণের হার ২০২০ সালে ছিল ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। মালদ্বীপের খেলাপি ঋণ এই সময়ে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। একই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম খেলাপি ঋণ তাইওয়ান ও কোরিয়ার। দেশ দুটির খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে শূন্য দশমিক ১ ও শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০২৪ সাল শেষে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুন শেষে এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকায়, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের চার ভাগের এক ভাগের বেশি খেলাপি হয়ে গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বলতে শুনেছি, গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে যে অর্থ বের করে নেওয়া হয়েছে, তা এখন খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হতে শুরু করেছে। আগেই বলেছি, ঋণখেলাপি হওয়ার নিয়ম আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কারণেও দেশে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। যেসব ঋণ নবায়ন করা হয়, তার অনেকগুলো আদায় হচ্ছে না। অনিয়মের কারণে অনেক ঋণকে খেলাপি হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ। এতে খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যা সামনে আরও বাড়তে পারে।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। এর পর থেকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করছিলেন, বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা নানা অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বের করে নিয়ে যাচ্ছেন, যার একটা বড় অংশই বিদেশে পাচার হয়ে গেছে।

সূত্রগুলো বলছে, দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও বহুল সমালোচিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হওয়া ব্যাংকগুলোর ঋণের প্রকৃত চিত্র বের হতে শুরু করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। একইভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে। এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কাজ বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। পাশাপাশি সরকারি খাতের জনতা ও রূপালী এবং বেসরকারি খাতের ইউসিবি, আইএফআইসি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ট্রাস্ট ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়েছে।

পত্রিকা সূত্রে জানা গেছে, খেলাপি হয়ে পড়া প্রায় ১ হাজার ২৫০ প্রতিষ্ঠান বিশেষ ব্যবস্থার অধীন ঋণ পুনর্গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়মিত করার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন একটি বিস্তৃত নীতিমালা তৈরি করে ব্যাংকগুলোকে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জানা গেছে, এই নীতিমালায় নির্দিষ্ট অর্থ জমা দিয়ে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে ঋণ পরিশোধে যতটা সময় অবকাশ পাবে, ওই সময়ে সুদ পরিশোধ করতে হবে। এর ফলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে আশা করছেন অনেকে। তবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী না করলে কিংবা ব্যবসা পরিচালনায় মনোযোগী না হলে তার উল্টোটাও ঘটতে পারে। সুযোগের অসৎ ব্যবহারের উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক।

সামগ্রিক ঋণখেলাপির সংস্কৃতি থেকে মুক্তি পেতে গেলে আমাদের দুষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতি তথা স্বজনতোষী পুঁজিবাদ থেকে যেমন বেরিয়ে আসতে হবে, তেমনি ঋণ সম্প্রসারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। কমাতে হবে পরিচালকদের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপ।

মামুন রশীদ ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক

মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ