মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কিছু দাবি গতকাল সোমবার প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবিগুলো মানা হলে তা বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ একটি রক্ষণশীল সরকারের কাছে হস্তান্তর করত। এটি সেই সরকার, যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিপজ্জনকভাবে বামপন্থী হিসেবে চিত্রিত করছে।

হার্ভার্ডের এমন অবস্থান গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মাথায় ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দেয়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করছে।

গত ১৮ মাসে গাজা যুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ হয়। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ করে ট্রাম্প প্রশাসন। এই অভিযোগে গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের ৯ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল চুক্তি ও অনুদান পর্যালোচনা করার কথা বলেছিল। এখন হার্ভার্ডের ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করার কথা জানাল ট্রাম্প প্রশাসন।

গতকাল হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার এক প্রকাশ্য চিঠিতে লিখেছেন, গত সপ্তাহে শিক্ষা দপ্তর যে দাবিগুলো করে, তা মানা হলে ফেডারেল সরকারকে হার্ভার্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিত। এই দাবিগুলো জ্ঞানের সাধনা, উৎপাদন ও প্রচারের জন্য নিবেদিত একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে হার্ভার্ডের মূল্যবোধের জন্য হুমকিস্বরূপ।

চিঠিতে অ্যালান গার্বার আরও লিখেছেন, ক্ষমতায় যে দলই থাকুক না কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী পড়াতে পারবে, কাকে ভর্তি করতে পারবে, কাকে নিয়োগ দিতে পারবে, অধ্যয়ন ও অনুসন্ধানের কোন ক্ষেত্রগুলো অনুসরণ করতে পারবে, তা কোনো সরকারেরই নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ