যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কিছু দাবি গতকাল সোমবার প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

হার্ভার্ডের এমন অবস্থান গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মাথায় ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দেয়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করছে। 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদেন এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

ট্রাম্পের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন বুধবার

সেমিকন্ডাক্টর চিপের ওপর শিগগির শুল্ক আসছে: ট্রাম্প

সোমবার ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, ‘হার্ভার্ডের আজকের বিবৃতি আমাদের দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে থাকা উদ্বেগজনক দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও ঘনীভূত করেছে।”

ক্যাম্পাসগুলোতে ইহুদি বিদ্বেষ মোকাবেলা করতে গত সপ্তাহে হার্ভার্ডকে এক গুচ্ছ দাবির একটি তালিকা পাঠানোর কথা জানিয়েছিল হোয়াইট হাউজ। এর মধ্যে পরিচালনা পদ্ধতির পরিবর্তন, লোকবল নিয়োগ পদ্ধতি ও ভর্তি প্রক্রিয়ার মতো বিষয়গুলো ছিল।

সোমবার সেটি প্রত্যাখ্যান করে হার্ভার্ড বলেছে, হোয়াইট হাউজ তাদের ‘নিয়ন্ত্রণ’ করার চেষ্টা করেছে।

এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বড় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নীতি পরিবর্তনের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের চাপকে প্রত্যাখ্যান করলো।

হোয়াইট হাউজ যেসব পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল তাতে হার্ভার্ডের কার্যক্রমে পরিবর্তন আসতো এবং ব্যাপক আকারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ হতো।

গাজা যুদ্ধ ও ইসরায়েলকে সমর্থনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

সোমবার হার্ভার্ড কমিউনিটিতে দেয়া একটি চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্বার বলেছেন, হোয়াইট হাউজ একটি দাবির তালিকা পাঠিয়েছে এবং একই সাথে সরকারের আর্থিক সম্পর্কের সাথে মানিয়ে চলার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

চিঠিতে হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, “আমাদের আইনি পরামর্শকের মাধ্যমে আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি যে, আমরা তাদের প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করছি না। বিশ্ববিদ্যালয় এর স্বাধীনতা ও সাংবিধানিক অধিকারকে পরিত্যাগ করবে না।”

অ্যালান গার্বার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দায়িত্বকে হালকাভাবে নিবে না কিন্তু সরকার এ বিষয়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।

তিনি বলেন, “যদিও সরকারের কিছু প্রস্তাবের লক্ষ্য হলো ইহুদি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করা কিন্তু এর বেশিরভাগই হার্ভাডের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিস্থিতির ওপর সরাসরি সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিই তুলে ধরে।”

​হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবারের চিঠি পাঠানোর কিছুক্ষণ পরেই, মার্কিন শিক্ষা বিভাগ ঘোষণা করে যে, তারা হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত ২২০ কোটি ডলারের অনুদান এবং চুক্তিভিত্তিক অর্থায়ন তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করছে।

শিক্ষা বিভাগ এক বিবৃতিতে আরো বলেছে, “ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি গ্রহণযোগ্য নয়। অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এই সমস্যাকে গুরুত্ব সহকারে নেয়া ও অর্থপূর্ণ পরিবর্তনের অঙ্গীকার করার এটাই সময়, যদি তারা করদাতাদের অব্যাহত সমর্থন পেতে চায়।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র জন য স মব র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শনি গ্রহের একাধিক চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের সন্ধান

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনি গ্রহের আটটি মাঝারি আকারের চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড শনাক্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে মিমাস, এনসেলাডাস, ডায়োন, টেথিস, রিয়া, হাইপেরিয়ন, লাপেটাস ও ফিবি নামের চাঁদগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের তথ্য টেলিস্কোপের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি চাঁদগুলোর ওপরে নিয়মিত নজরও রাখছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ডায়োন ও রিয়া চাঁদে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড শনির প্রধান বলয়ের বরফের অনুরূপ। ফিবি চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইড জৈব পদার্থের বিকিরণের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়ে থাকে। লাপেটাস ও হাইপেরিয়নের অন্ধকার অঞ্চলে কার্বন ডাই–অক্সাইড দেখা যায়। বরফযুক্ত এসব চাঁদে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থা সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী মাইকেল ব্রাউন ও তাঁর সহকর্মীরা এক গবেষণাপত্রে লিখেছেন, কঠিন কার্বন ডাই–অক্সাইড সৌরজগতের প্রান্তসীমার বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। যদিও সেই অবস্থানে কার্বন ডাই–অক্সাইড স্থিতিশীল নয়। আমরা শনির উপগ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইডের অবস্থান জানার মাধ্যমে ভিন্ন পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন গ্রহে কার্বন ডাই–অক্সাইড কীভাবে আটকে আছে, তা জানার সুযোগ আছে এখানে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, শনির চাঁদে আটকে থাকা কার্বন ডাই–অক্সাইড থেকে আদর্শ ল্যাবের মতো তথ্য পাওয়া যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, শনি গ্রহের বিভিন্ন চাঁদে কমপক্ষে দুটি পৃথক উৎস থেকে কার্বন ডাই–অক্সাইড তৈরি হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ