সুনামগঞ্জের হাওর এলাকার বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বৈশাখজুড়ে চলবে এই ধান কাটা ও গোলায় তোলার কাজ। এ অবস্থায় ১৫ থেকে ২১ এপ্রিল সুনামগঞ্জ ও উজানের ভারতের মেঘালয়ে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাই হাওরে জমির ধান পেকে গেলে দ্রুত সেগুলো কাটার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন প্রশাসন, কৃষি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলায় হাওরে চলমান বোরো ধান কাটা এবং আগাম বন্যায় করণীয়বিষয়ক এক প্রেস ব্রিফিং থেকে কৃষকদের এ পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এ নিয়ে কৃষকদের আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এটি সঞ্চালনা করেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল।

ব্রিফিংয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তফা ইকবাল আজাদ জানান, হাওরে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। কৃষকদের ধান কাটায় ৭৩ হাজার শ্রমিকের পাশাপাশি ১৬০টি কম্বাইন হারভেস্টার ও ১৫টি রিপার মাঠে রয়েছে। এবার জেলায় ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। এই ধানের বর্তমান বাজারদর ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, মাঠের অবস্থা ভালো। ধান কাটা ও গোলায় তোলায় সহযোগিতার জন্য জেলার কৃষি বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার সীমানায় থাকা টগার হাওরে আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে বোরো ধান কাটার উদ্বোধন করা হয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ ক ষকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ