ট্রাম্প প্রশাসনের চাপে নতি স্বীকার না করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়: ওবামা
Published: 15th, April 2025 GMT
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩০ কোটি ডলারের কেন্দ্রীয় তহবিল স্থগিত করায় যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা দপ্তরের নিন্দা জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। খুদে ব্লগ লেখার সাইট এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ওবামা এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বেশ কিছু দাবি গতকাল সোমবার প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। হার্ভার্ডের এমন অবস্থান গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মাথায় ট্রাম্প প্রশাসন ঘোষণা দেয়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য ২৩০ কোটি ডলারের ফেডারেল তহবিল স্থগিত করছে।
এক্স হ্যান্ডলে দেওয়া পোস্টে ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘শিক্ষাঙ্গনের স্বাধীনতা হরণের বেআইনি ও আত্মঘাতী চেষ্টা প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে হার্ভার্ড অন্য উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তারা এমন ধরনের দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে যেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা, যথাযথ বিতর্ক, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের পরিবেশ থেকে লাভবান হতে পারে। আশা করছি, অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও তা অনুসরণ করবে।’
হার্ভার্ড হলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো বড় বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি হোয়াইট হাউসের নীতি পরিবর্তনের চাপকে উপেক্ষা করেছে।
গত শুক্রবার হার্ভার্ডকে লেখা এক চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা ব্যবস্থা ও নেতৃত্বে সংস্কার আনার আহ্বান জানিয়েছিল প্রশাসন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচি বাদ দেওয়া, কিছু বিভাগে অডিট চালানোসহ প্রতিষ্ঠানটির কাছে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়।
গতকাল এক চিঠিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার বলেন, কেন্দ্রীয় তহবিল ধরে রাখার আশায় তাঁরা এসব দাবি মেনে নিতে পারবেন না।
চিঠিতে গারবার লিখেছেন, ‘ক্ষমতায় যে দলই থাকুক না কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী পড়াতে পারবে, কাকে ভর্তি করতে পারবে, নিয়োগ দিতে পারবে এবং পড়াশোনা ও অনুসন্ধানের কোন ক্ষেত্রগুলো অনুসরণ করতে পারবে, তা কোনো সরকারেরই নির্ধারণ করা উচিত নয়।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সুস্পষ্ট কূটনৈতিক সাফল্য
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কমায় একে ঐতিহাসিক চুক্তি আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, “এটি সুস্পষ্ট এক কূটনৈতিক সাফল্য।”
শুক্রবার (১ আগস্ট) এক অভিনন্দন বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শুল্ক হার ২০ শতাংশ করা হয়েছে, যা আগে আরোপিত শুল্ক হারের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। এর মাধ্যমে আমাদের আলোচকরা অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা ও সেটাকে আরো এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অবিচল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, আলোচকরা এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে নিরলসভাবে কাজ করে জটিল আলোচনাকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। যেখানে শুল্ক, অশুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনার মাধ্যমে অর্জিত এই চুক্তি আমাদের তুলনামূলক সুবিধা সংরক্ষণ করেছে। পাশাপাশি, বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তাবাজারে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি ও আমাদের মূল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেছে।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ২০ শতাংশ
কোন দেশে কত শুল্ক বসালেন ট্রাম্প
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরো বলেন, এ অর্জন কেবল বাংলাদেশের বৈশ্বিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তিকে তুলে ধরে না; বরং এটি বৃহত্তর সম্ভাবনা, ত্বরান্বিত প্রবৃদ্ধি ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করে।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল, উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আজকের সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও আগামী দিনের আরো শক্তিশালী অর্থনীতির সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী প্রমাণ।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/রফিক