এনসিপির জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪০
Published: 19th, April 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তৃতীয় সাধারণ সভায় আগামী দিনের কর্মসূচি, অঞ্চলভিত্তিক সাংগঠনিক নীতিমালা ও সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। সভায় জেলা ও উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হওয়ার জন্য ন্যূনতম বয়স ৪০ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলের কিছু নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে 'শৃঙ্খলা ও তদন্ত' কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুক্রবার বিকেল ৩টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘণ্টাব্যাপী এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
সভা শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দলটি জানায়, সাধারণ সভায় অঞ্চলভিত্তিক সাংগঠনিক কাঠামো চূড়ান্ত করা, সংস্কারের প্রস্তাব প্রণয়ন, গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি ও আওয়ামী লীগের 'গণহত্যার' বিচারের দাবিতে কর্মসূচি গ্রহণ, সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি সহিংসতা এবং ভারতের ওয়াকফ বিলবিরোধী আন্দোলনে দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সরকারের প্রতি কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রস্তাব করেন মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এবং (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। প্রস্তাবিত নীতিমালায় ৬৪টি জেলাকে ১৯টি জোনে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা কমিটিতে ৩১ থেকে ৫১ জন এবং উপজেলা কমিটিতে ২১ থেকে ৪১ জন সদস্য থাকবেন। দুই পর্যায়ের কমিটিতেই আহ্বায়ক হতে হলে বয়স অন্তত ৪০ বছর হতে হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও জনপরিসরে দলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাবিরোধী আচরণের অভিযোগ ওঠায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি 'শৃঙ্খলা ও তদন্ত' কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটির ঘোষণা দেওয়া হবে আগামী রোববার।
এদিকে বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে চলতি সপ্তাহে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলেও দলটি জানিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প ন হ দ ইসল ম আখত র হ স ন প রস ত ব এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
‘শত শত বাস আসছে, পা ফেলানোর জায়গা নাই’
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর নারান্দিয়ার বাসিন্দা শেফালী বেগম। সাভারের বাইপাইল এলাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন তিনি। ঈদুল আজহার ছুটি শেষ হওয়ায় শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে প্রায় চার ঘণ্টা কালিহাতীর এলেঙ্গায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন এই নারী। বাসে উঠতে না পেরে কর্মস্থলে যেতে তাকে উঠতে হয় পিকআপ ভ্যানে। ২০০ টাকার জায়গায় ৩৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে রওনা হন গন্তব্যে।
যাত্রা শুরুর আগে শেফালী বলেন, “গরম ও সড়কের ধুলাবালিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। সড়কে চার ঘণ্টা দাঁড়িয় থেকে উপায় না পেয়ে পিকআপে করে ঢাকায় যেতে হচ্ছে।”
শুধু শেফালী নয়, তার মতো লাখ লাখ মানুষ আজ দিনভর ভোগান্তি নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে দিয়ে ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে শত শত মানুষকে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কেউ ২ ঘণ্টা, কেউ ৩ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন গণপরিবহনের জন্য।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে মহাসড়কে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ
সিরাজগঞ্জে গাড়ির অপেক্ষায় কর্মস্থলে ফেরা মানুষ
জুলেখা বেগম বলেন, “আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। উত্তরবঙ্গ থেকে শত শত বাস আসছে, কিন্তু কোনো বাসেই পা ফেলানোর মতো জায়গা নাই। গরমও সহ্য হচ্ছে না।”
কর্মস্থলে ফিরতে বাসের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীদের একাংশ
ইকবাল আলী বলেন, “মহাসড়কে ভোগান্তি ছাড়া কিছুই দেখছি না। পরিবহনগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।”
হারুন মিয়া নামে এক ট্রাক চালক বলেন, “সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। স্বাভাবিক সময় লাগে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।”
এর আগে, গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকল হওয়ায় যমুনা সেতুর টোলপ্লাজা থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তা কমে ১৪ কিলোমিটারে আসে। এছাড়া, মহাসড়কে গণপরিবহনের সংকট থাকায় কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খোলা ট্রাক ও পিকআপে গন্তব্যে যাচ্ছে মানুষ। সব মিলিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ১৮২টি যানবাহন যমুনা সেতা পারাপার করেছে। এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “মহাসড়কে যানজট নিরসনে পুলিশ কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ